Sunday, October 5, 2008

নোয়াখালীর এক অকুতোভয় মুক্তিযোদ্ধা শহীদ সাহাব উদ্দিন এস্কেন্দার ভুলু



বৃহত্তর নোয়াখালীর মুক্তিযুদ্ধের এক অন্যতম সংগঠক বীর মুক্তিযোদ্ধা সাহাবউদ্দিন এস্কেন্দার ভুলু একাত্তরের ৬ সেপ্টেম্বর হানাদার পাক বাহিনীর হাতে ধরা পড়ে নির্মম ভাবে নিহত হয়েছিলেন। তিনি ছিলেন স্বাধীনতাপূর্ব নোয়াখালীর গৌরবময় ক্রীড়া জগতের অন্যতম সংগঠক। এক সময় বৃহত্তর নোয়াখালীতে কচি, ছালু ও ভুলু এই তিন ভাইয়ের নাম ফুটবল সহ ক্রীড়াঙ্গনে ছিলো সুপরিচিত। তাঁদের ফুটবল দলের নাম ছিল এস্কেন্দার ব্রাদার্স। তাঁর পিতা মরহুম সেকান্দার মিয়া ছিলেন নোয়াখালীর স্বনামধন্য উকিল, জেলা উকিল বারের সভাপতি ও বৃহত্তর নোয়াখালী জেলা আওয়ামী লীগের অন্যতম প্রতিষ্ঠাতাদের একজন। শহীদ ভুলুর বড় ভাই মরহুম সহিদ উদ্দিন এস্কেন্দার কচি মিয়া ছিলেন অসহযোগ আন্দোলনের সময় নোয়াখালী জেলা আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক, মহান মুক্তিযুদ্ধের অন্যতম সংগঠক ও নোয়াখালী পৌর সভার সাবেক চেয়ারম্যান এবং সাবেক এম,এন,এ ও এম,পি।

মুক্তিযুদ্ধ শুরু হলে নোয়াখালী টাউন হল ছিলো মুক্তিযুদ্ধের কন্ট্রোল রুম। মুক্তিযুদ্ধের শুরুতে এখান থেকেই মুক্তিযোদ্ধাদের সংগঠিত ও নিয়ন্ত্রন করা হতো। শহীদ সাহাব উদ্দিন এস্কেন্দার ভুলু মুক্তিযোদ্ধাদের সংগঠিত করার দায়িত্ব পেয়ে টাউন হলেই তাঁর কর্মতৎপরতা শুরু করেন। এপ্রিলের শেষে পাক হানাদার বাহিনী এ শহর দখল করলে মুক্তিযোদ্ধারা বিভিন্ন দিকে মুক্তাঞ্চলে চলে যায়। তখন শহীদ ভুলু মুক্তিযোদ্ধাদের নিয়ে শহরের পূর্বাঞ্চলে কাদিরপুরে গিয়ে মুক্তিযুদ্ধের ঘাঁটি গড়ে তুলেন। তিনি ২ নং সেক্টর কমান্ডার মেজর এটিএম হায়দারের অধীনে ছিলেন। সে সময় কাদিরপুরে তাঁদের পৈত্রিক বাড়ির কাছে ডা:রজনী কুমার দাসের বাড়িতে মুক্তিযোদ্ধাদের গোপন সভা অনুষ্ঠিত হতো। উত্তর কাদিরপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়টিও ছিলো মুক্তিযোদ্ধাদের অন্যতম ঘাঁটি । ৫ সেপ্টেম্বর সেই ঘাঁটির উপর দিয়ে একটি পাকিস্তানী ফাইটার বিমান খুব নীচু হয়ে উড়ে যায়। সে সময় মুক্তিযোদ্ধারা বিমান লক্ষ করে মেশিন গান থেকে গুলি ছুঁড়ে। এদিকে স্থানীয় রাজাকাররা গোপনে মুক্তিযুদ্ধের ঘাঁটির সঠিক খবরাখবর পাকিস্তানী হানাদার বাহিনীকে জানায়। আগরতলার এক তরুণ নবীন ইলেক্ট্রিক ইঞ্জিনিয়ার বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধে উদ্বুদ্ধ হয়ে নোয়াখালীর মুক্তিযোদ্ধাদের সাথে যুদ্ধ করে যাচ্ছিলেন। তাঁর নাম ছিলো অমল নাগ। তিনি ক্যাপ্টেন নাগ বলে সমধিক পরিচিত ছিলেন। ৫ সেপ্টেম্বর রাতে পার্শবর্তী বসুর হাটে মুক্তিযোদ্ধাদের এক বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়। বৈঠক শেষে শহীদ ভুলু ও ক্যপ্টেন নাগ অন্য সহযোদ্ধাদের সাথে গভীর রাতে কাদিরপুর ক্যাম্পে ফিরে আসেন। সেই ক্যম্পের পাশে খালের মধ্যে নৌকা বেঁধে তাঁরা নৌকার মধ্যেই ঘুমিয়ে ছিলেন। ৬ সেপ্টেম্বর খুব প্রত্যুশে বেগমগঞ্জ টেকনিক্যাল স্কুলের পাক বাহিনীর ক্যাম্প থেকে ছয়টি নৌকা বোঝাই এক প্লাটুন পাকিস্তানী সৈন্য অতর্কিতে এসে সমগ্র এলাকা ঘিরে ফেলে। এ ঘটনায় মুক্তিযোদ্ধারা হতচকিত হয়ে পড়েন। সহযোদ্ধারা দ্রুত নিরাপদ স্থানে চলে যেতে পারলেও সে সময় শহীদ ভুলু ও ক্যাপ্টেন নাগ গভীর ঘুমের মধ্যে ছিলেন। ত্বরিৎ বেগে হানাদার পাক সৈন্যরা তাঁদের নৌকা ঘিরে ফেলে। ঘুম থেকে জেগে উঠেই তাঁরা পাক সৈন্যদের সঙ্গে প্রতিরোধ যুদ্ধে লিপ্ত হন। কিন্তু তখন অনেক দেরি হয়ে গেছে। পাক সৈন্যদের একটি গুলি সাহাব উদ্দিন এস্কেন্দার ভুলুর বাম বাহুতে এসে লাগলে তিনি মারাত্মক আহত হন। আহত অবস্থায় তিনি ও ক্যাপ্টেন নাগ পাক সৈন্যদের হাতে ধরা পড়ে যান। হানাদাররা তাঁদেরকে পার্শবর্তী স্কুলের বারান্দায় এনে হাত পিছমোড়া করে গরুর রশি দিয়ে বেঁধে রাখে। পাক সেনারা বারবার জানতে চায়, কে সাহাব উদ্দিন এস্কেন্দার ভুলু। তখন সেখানে উপস্থিত দুই ঘৃন্য রাজাকার কাজী অবুবকর সিদ্দিক ও কাজী মতিউর রহমান শহীদ ভুলুকে দেখিয়ে দেয়। তখন তারা উভয়কে বেগমগঞ্জ আর্মি ক্যাম্পে নিয়ে যেতে চায়। কিন্তু রাজাকাররা তাঁদের দুজনকে এখানেই হত্যা করতে পিড়াপিড়ি করে। এ নিয়ে রাজাকার ও হানাদার বহিনীর অফিসারের সাথে উত্তপ্ত বাক্যও বিনিময় হয়। তখন শহীদ ভুলু বার বার জয় বাংলা বলে স্লোগান দিতে থাকেন। এ সময় পাক সৈন্যরা বেয়নেট দিয়ে তাঁর কণ্ঠনালী কেটে ফেলে। এরপর তাঁকে পিছন দিক থেকে পরপর তিনটি গুলি করে। মৃত্যু নিশ্চিত হতে হায়নারা তাঁকে বেয়োনেট দিয়ে বার বার খুঁচিয়ে খুঁচিয়ে নৃসংশভাবে হত্যা করে। সে অবস্থায় তাঁর লাশ সেখানে পড়ে থাকে। শহীদ ভুলুর লাশ সেখানে ফেলে রেখেই পাক বাহিনীরা ক্যাপ্টেন নাগকে নিয়ে বেগমগঞ্জ ক্যাম্পে ফিরে যায়। ক্যাম্পে ক্যাপ্টেন নাগের উপর চলে অমানুষিক নির্যাতন। দেশ স্বাধীন হলে অর্ধমৃত অবস্থায় তিনি মুক্তি পান।

হানাদার বহিনীরা কাদির পুর ছেড়ে চলে গেলে মুক্তি বাহিনীরা এসে শহীদ ভুলুর লাশ উদ্ধার করে পূর্ণ সামরিক মর্যাদায় তাঁর বাড়িতে এনে তাঁর বাবার কবরের পাশে তাঁকে দাফন করে। এর কয়দিন পর সেনবাগে রাজাকারদের সঙ্গে মুক্তিযোদ্ধাদের এক যুদ্ধে কজন রাজাকার সহ শহীদ ভুলুর হত্যার সহযোগি দুই রাজাকার কাজী আবু বকর সিদ্দিক ও কাজী মতিউর রহমান মারা পড়ে।

সাহাব উদ্দিন ভুলু শহীদ হওয়ার সময় তাঁর তিন ছেলে ছিলো একেবারেই শিশু। তখন বড় ছেলে জুয়েল চার বছর, মেঝো ছেলে সোহেল আড়াই বছর ও ছোট ছেলে দীপেলের বয়স ছিলো মাত্র ছয়মাস। তাদের মাইজদী শহরের লক্ষীণারায়ন পুরের বাড়িটি ছিলো রাজনীতির নানান স্মৃতিতে ঘেরা। বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান, মজলুম জননেতা মাওলানা ভাষানী, সোহরাওয়ার্দী, পাকিস্তানের বিরোদীদলের নেতা আজম খাঁন প্রমুখ দেশ বরেণ্য নেতাদের পদচারনায় এলাকাটি ছিলো সদা মুখরিত। সে স্মৃতিময় বাড়িটিও পাক হানাদারেরা পুড়িয়ে দেয়। সেই থেকে নানান ঘাত প্রতিঘাতে আত্মীয়স্বজন পাড়াপড়শীদের সহযোগীতায় তারা আজ মানুষ হয়েছে। স্বাধীনতার পর বঙ্গবন্ধু নোয়াখালীতে এসে শহীদ ভুলুর বৃদ্ধা মা আজমুদা খাতুনকে জড়িয়ে ধরে কেঁদে কেঁদে বলেছিলেন, আপনার এক ছেলে যুদ্ধে হারিয়ে গেলেও আমিতো আপনার আর এক ছেলে আছি। পঁচাত্তর পরবর্তীতে এই পরিবারের উপর সরকারি ভাবে নেমে এসেছিলো বঞ্চনা আর অবহেলা। সবচেয়ে আশ্চর্য ও গ্লানিকর দিক হলো, যে দুই রাজাকার শহীদ ভুলকে হত্যার সহযোগীতা করেছিলো কাজী আবু বকর সিদ্দিক ও কাজী মতিউর রহমান দুজনেই একসাথে মুক্তিযোদ্ধাদের সাথে যুদ্ধে অত্যন্ত ঘৃনিত ভাবে মৃত্যু বরণ করলেও দীর্ঘদিন থেকে শহীদ পরিবার হিসাবে তাদের পোষ্যরা ভাতা পেয়ে আসছিলো। স্বাধীনতা বিরোধী চক্র তাদের নামে এ বরাদ্ধ এতো দিন দিয়ে আসছিলো বলে শহীদ ভুলু পরিবার সূত্রে জানা গেছে।

নোয়াখালীর ক্রীড়া জগতের এক সময়ের এ অনন্য সংগঠকের কাজের স্বীকৃতি স্বরূপ মুক্তিযুদ্ধে তাঁর মহান অবদান ও আত্মত্যাগের প্রতি শ্রদ্ধা জানিয়ে জেলাবাসি এ এলাকার একমাত্র ষ্টেডিয়ামের নাম করণ করে,শহীদ ভুলু ষ্টেডিয়াম। এটি এখন আন্তর্জাতিক মানের ষ্টেডিয়াম হিসাবে গড়ে উঠছে।

নোয়াখালীবাসি এই অকুতভয় শহীদ মুক্তিযোদ্ধাকে চিরদিন শ্রদ্ধার সঙ্গে স্মরণ করবে।


লেখক : মাহ্‌মুদুল হক ফয়েজ
সহযোগী সম্পাদক, নোয়াখাখালী ওয়েব

অর্থনৈতিক সম্ভাবনার অবারিত দ্বার নোয়াখালী

অতি প্রাচীন ইতিহাস সম্বৃদ্ধ নোয়াখালী জেলা। ১৯২১ থেকে ২০০৮ সাল। দীর্ঘ ১৮৭ বছর ইতিহাসের পথ পরিক্রমায় এ জেলার সন্তানদের বীরোচিত ত্যাগ জাতিকে করেছে মহিমান্বিত, জেলাবাসী হয়েছে গর্বিত। প্রকৃতির অপার রূপ আর সম্পদ সম্বৃদ্ধ এ জেলার ফসলের ভান্ডার উদ্বৃত্ব। কৃষি ও কৃষিজাত পণ্য, পশু, মৎস্য সম্পদ, তাঁত বস্ত্র, লবন চাষ (বর্তমানে বিলুপ্ত) রপ্তানী করে বৈদেশিক মুদ্রা অর্জনের ইতিহাসও সুদীর্ঘ কালের। কালের পরিক্রমায় প্রকৃতির খেয়ালে বহুবার নোয়াখালীর উপকূল ভেঙ্গেছে আবার গড়েছে। ভাঙ্গা গড়ার এ চোরাবালির মাঝে মানুষ নিঃস্বও হয়েছে আবার সম্বৃদ্ধ হয়েছে।

নোয়াখালীর ৭০ ভাগ মানুষ প্রত্যক্ষ বা পরোক্ষ ভাবে কৃষিজীবি। প্রকৃতিকে নির্ভর করে গ্রামের বনেদীগৃহস্থ পরিবার ছিল স্বয়ম্ভর। তবে আধুনিক কৃষি ব্যবস্থার সুযোগের অভাবে কৃষিতে এসেছে সংকট। সে সংকট অব্যাহত। গত দু'দশক ধরে নতুন সর্বনাশ জলাবদ্ধতা জেলার কৃষি ব্যবস্থাকে কেবল ধ্বংস করেনি, বিরাণ করেছে গ্রামীন অর্থনীতিকে। বাড়িয়েছে বেকারত্ব। সম্পন্ন কৃষক ও কৃষি পরিবার হয়েছে সর্বশান্ত। পেশা বদল করে অনেকে কৃষি বিমুখ হওয়ায় কৃষিতে অভিজ্ঞতা সম্পন্ন জনবল সংকট তীব্র থেকে তীব্রতর হয়েছে। অথচ স্বাধীনতার পরবর্তী সরকার ব্যবস্থার সকল পর্যায়ে নোয়াখালীর বিদগ্ধ সন্তানদের উজ্জ্বল উপস্থিতি থাকলেও কৃষি নির্ভর জেলার কৃষিখাতে সংকট সমাধানে কেউ এগিয়ে আসেনি। সাবেক ৬ উপজেলা এখন প্রশাসনিক প্রয়োজনে ৯ উপজেলায় রূপান্তরিত। তাতে মানুষের উন্নয়ন হবে এ আশাবাদ করা যেতে পারে। কিন্তু নোয়াখালীর কোম্পানীগঞ্জ ও হাতিয়া উপজেলা ছাড়া বাকী ৭ উপজেলা বর্ষা মৌসুম ও মৌসুম পরবর্তী ২ মাস জলাবদ্ধ থাকে কৃষি জমি। দীর্ঘস্থায়ী জলাবদ্ধতা কৃষির যে বিপর্যয় এনেছে তা থেকে উত্তোরনের কোন সঠিক পরিকল্পনা নেই। রাসায়নিক দাহ্য পদার্থের আগুনের লেলিহান শিখার মত দ্রব্য মূল্য যখন মানুষকে সর্বাঙ্গে পুড়তে শুরু করেছে তখন আমাদের রাষ্ট্র ব্যবস্থার টনক নড়েছে। গত দু'দশকে কৃষি আর কৃষকের প্রতি যে অবহেলা তার প্রতিশোধ নিচ্ছে দ্রব্য মূল্য। সুজলা, সুফলা শস্য শ্যামলা বাংলাদেশের কৃষিকে কার স্বার্থে বিদেশী বাজারে পরিণত করে এর অগ্রযাত্রাকে বাধাগ্রস্থ করেছে তার মূল্যয়ান করা সময়ের দাবী।

নোয়াখালীর কৃষির বিশাল সম্ভাবনা হলেও প্রায় ৬৫ হাজার একর জমি এখনো সারা বছর পতিত থাকে। একফসলী জমির পরিমাণ ৪৭ হাজার একর। কৃষি জমির বিশাল ভান্ডার উপকূল জুড়ে। সেখানে সীমিত সুযোগ নিশ্চিত হলে ৮০হাজার একর জমিকে ত্রি-ফসলী করা সম্ভব। অথব জলাবদ্ধতা, সেচের অভাব, সার সংকট, কীটনাশক সংকট ছাড়াও ভেজাল বীজ, সার, ঔষধ কৃষি এবং কৃষকের অস্তিত্বকে হুমকিতে ফেলেছে।
এ জেলায় মৌসুমী বৃষ্টিপাতের পরিমাণ বেশী। পরিকল্পিত নিষ্কাশন ব্যবস্থা সেভাবে গড়ে উঠেনি। গত তিন দশকে উন্নয়নের জোয়ারে পুল, কালভার্ট, রাস্তা অবকাঠামতে হয়নি তা বলা যাবে না, তবে মূল বিষয় খাল সংস্কার, পানি নিষ্কাশন ও সেচ সুবিধার বিষয়ে জনগণের দীর্ঘদিনের দাবী পুরোপুরি উপেতি হয়েছে। মেঘনা আর ডাকাতিয়া নদীর সাথে সংযোগে খালগুলো মরে যাচ্ছে, বেদখল হয়েছে প্রভাবশালীদের দ্বারা অথচ প্রশাসন সহ সংশ্লিষ্টরা এগুলোকে আমলে নেয়নি। বরং কতিপয় ক্ষেত্রে সহযোগিতা করেছে।

উপকূলীয় অঞ্চলের হাজার হাজার একর অনাবাদি জমি পতিত পড়ে রয়েছে। সেচ সুবিধার অভাবে প্রতি বছর ৭০ হাজার একর জমিতে ফসল বুনন হয় না। হাতিয়া ভাঙছে গত তিন দশকের বেশী সময় ধরে, দেখার কেউ নেই। কতিপয় রাজনৈতিক নেতা, স্থানীয় জনপ্রতিনিধি, অসাধু সরকারী কর্মকর্তা ও কর্মচারী ও প্রভাবশালীদের মদদে ৫০ হাজার হেক্টরের বনাঞ্চল উজাড় হয়েছে। ঝড় জলোচ্ছাসে উপকূলের কতিপয় অঞ্চলে কয়েক লাখ মানুষ এখন জীবনের ঝুঁকি নিয়ে বসবাস করছে। তাদের থাকার কোন ব্যবস্থা নেই। গরু, মহিষ, ভেড়া তথা পশু সম্পদ সম্বৃদ্ধ উপকূলে এখন পশুর অভাব। কথিত ভূমিহীন ও মৎস্য চাষীরা খাস জমি দখল করে ফেলছে। অথচ পশুদের জন্য চারণভূমি নেই। সরকারের পরিকল্পিত উপকূল উন্নয়নের ফাইলে উই পোকা ধরেছে। এ কারণে উপকূলের কথিত উন্নয়ন এখন শীতাতপ হলঘরে, সেমিনার, টকশোতে সীমাবদ্ধ।
উপকূলের কৃষক নতুন ফসলে উৎপাদনে আগ্রহী হয়েছে। গত ১০ বছরে উপকূলীয় এলাকায় তরমুজ, ঢেঁড়স, সয়াবিন, বাদাম, ভূট্টা ও গমের চাষ হচ্ছে। সবজি চাষে আগ্রহী কৃষক আগাম শীতের সবজি বাজারে নিয়ে আসছে। অথচ তাদের জন্য প্রযুক্তি, বীজ, সার, প্রয়োজনীয় তথ্য, সেচ ব্যবস্থা ইত্যাদি সুযোগ খুবই সীমিত। সংশ্লিষ্ট বিভাগে লোকবল সংকটও রয়েছে। প্রান্তিক চাষীর জমি নেই। অথচ তার উদ্যোগ ও মেধা আছে। তা কাজে লাগানোর নিশ্চয়তা চায়। চায় উৎপাদিত পণ্যের মালিকানা ও খাস ভূমি।

সরকার বলছে, খাদ্য উৎপাদন বৃদ্ধি করতে হবে। পতিত জমি চাষাবাদের আওতায় আনতে হবে। অথচ এর জন্য প্রয়োজনীয় সাপোর্ট পায় না কৃষক। ব্যক্তি মালিকানা ও খাস ভূমির মালিকানা সামন্ত প্রভু ও প্রভাবশালীদের। তারা চাষ করে না। এ জন্য জমি চাষে বাধ্য করার আইন প্রয়োজন। এ জেলায় খামার ভিত্তিক গবাদি পশু, মৎস্য চাষ, হাঁস-মুরগী, মৌসুমী ফল ও সবজি চাষের ব্যাপক প্রসার ঘটছে। তবে এর উন্নয়ন ও প্রযুক্তিগত সুবিধা সংশ্লিষ্ট বিভাগ থেকে পাওয়া যায় না। মৎস্য চাষে উপকূলীয় অঞ্চলে আরেকটি নতুন বিপ্লব ঘটেছে। সরকারী খাস জমি ও ব্যক্তিগত জমিতে বৈধ অবৈধ ভাবে গড়ে উঠা মৎস্য প্রকল্প থেকে প্রতিদিন গড়ে ৫০ টন মাছ বাজারে আসছে। এ অঞ্চলে গড়ে উঠেছে আধুনিক হ্যাচারী, দুগ্ধ খামার, ফিড প্রসেসিং কারখানা সবই হচ্ছে পরিকল্পনাহীন ভাবে। ইতিমধ্যে বিশ্বব্যাংকের অর্থায়নে কোটি কোটি টাকা ব্যয়ে ২টি ফিশ প্রসেসিং কারখানা গড়ে উঠেছে, যা শুরুতেই বন্ধ হয়ে গেছে। এই ধরনের প্রকল্পগুলোকে পরিকল্পিত ভাবে এবং সুচিন্তিত ভাবে বাস্তবায়নের জন্য উদ্যোগ নিতে হবে। সম্প্রতি সেনাবাহিনী প্রধান জেনারেল মইন উ আহমেদের সুচিন্তা প্রসূত ফোর কাউ, গুটি ইউরিয়া, জৈব সার, বায়োগ্যাস প্রকল্প ও ক্ষুদ্র সমবায় ভিত্তিক প্রকল্পগুলো গ্রামীন জনপদের কৃষকের মাঝে আশার সঞ্চার করেছে। সেনাবাহিনীর কারিগরী সহযোগিতায় এই ধরনের প্রকল্প বেকারত্ব নিরসনে কার্যকর ভূমিকা পালন করবে।

নোয়াখালীর পর্যটন শিল্প সম্ভাবনা দেশের অর্থনৈতিক উন্নয়নে আরো একটি উদ্যোগ হতে পারে। বিদ্যুৎ, পানীয় জল অবকাঠামো ও যোগাযোগ ব্যবস্থা নিশ্চিত করা গেলে নিঝুম দ্বীপ, চরকার্ক-সন্দ্বীপ চ্যানেল, কোম্পানীগঞ্জের মুছাপুর সহ বিশাল অঞ্চল জুড়ে পৃথক পর্যটন শিল্পের বিকাশ সম্ভব। এছাড়া ৪৩ কিলোমিটার লম্বা ঐতিহাসিক নোয়াখালী খালটি হতে পারে পর্যটন শিল্প বিকাশের আরেকটি অন্যতম উপাদান। জেলার উপকূলের ১৫শ বর্গকিলোমিটার জুড়ে গড়ে তুলতে হবে পরিকল্পিত ম্যানগ্রোভ ফরেস্ট। পরিবেশের জন্য যা হবে খুবই প্রয়োজন। পাশাপাশি প্রাকৃতিক দুর্যোগ মোকাবেলায় উপকূলীয় অঞ্চলের মানুষকে রক্ষা করার জন্য প্রকৃতির এ দেয়াল গড়ে তোলার বিকল্প নেই। একই সাথে পরিবেশ, প্রতিবেশ এবং জীব বৈচিত্রকে রক্ষা করার জন্য বনায়ন, বিশাল বিশাল জলাশয় খনন খুবই জরুরী, যা পাল্টে দেবে এ জনপদের মানুষের জীবন যাত্রাকে।
নোয়াখালীতে ইতিমধ্যে বেশকিছু উচ্চতর শিক্ষা প্রতিষ্ঠান গড়ে উঠেছে। এর মধ্যে নোয়াখালী বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়, এগ্রিকালচার ট্রেনিং ইনিস্টিটিউট, টেক্সটাইল ইঞ্জিনিয়ারিং কলেজ, নার্সিং ট্রেনিং ইনিস্টিটিউট, মেডিকেল এ্যাসিসটেন্ট ট্রেনিং স্কুল (ম্যাট্স), পুলিশ ট্রেনিং সেন্টার অন্যতম। তবে জনসংখ্যার বিচারে এবং আয়তনের বিশালতায় সেই হিসেবে মাধ্যমিক ও উচ্চ মাধ্যমিক পর্যায়ের শিক্ষা ব্যবস্থা তেমন উন্নতি ঘটেনি। মানসম্মত শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের অভাবে প্রতিবছর বহু মেধাবী ছাত্রছাত্রী শি সুযোগ থেকে বঞ্চিত হচ্ছে। এ থেকে উত্তোরনের প্রয়োজন, প্রয়োজন আধুনিক যোগাযোগ ব্যবস্থার প্রসার। আমরা ইতিমধ্যেই জেনেছি নোয়াখালীতে মেডিকেল কলেজ, ইপিজেড, নৌ বন্দর, সুবর্ণচর পর্যন্ত রেলপথ সম্প্রসারণ ও নির্মাণের বিষয়ে সম্ভাব্যতা যাচাই হচ্ছে; যা হবে স্থল ও নৌ পথে বহুমুখী বাণিজ্য প্রসারের একটি বিশাল উদ্যোগ।

নোয়াখালীর জেলার সন্তানরা যারা উচ্চ পর্যায়ে বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ দায়িত্বে আছেন, তারা বিষয়গুলো নিয়ে সরকারের বিভিন্ন পর্যায়ে দেন-দরবার করে এ উদ্যোগ গুলোর সফল বাস্তবায়ন করবেন- এ প্রত্যাশা জেলাবাসী করে। অবশ্যই বিষয়গুলো করুণা নয়, নোয়াখালীর মানুষ ইতিহাসে অনেক পংকিল পথে সাহসী ভূমিকা নিয়ে মানুষের পক্ষে দেশের পক্ষে দাড়িয়েছে, হারিয়েছে অনেক কিছু, সে তুলনায় পায়নি কিছুই। যে উদ্যোগ গুলো নিয়ে আলোচনা চলছে তা হবে দেশের জন্য, দেশের অর্থনীতির জন্য সম্ভাবনার নতুন দিগন্ত। এগুলো বাস্তবায়ন দেশের অর্থনৈতিক স্বার্থেই করতে হবে।

লেখক : বিজন সেন
নোয়াখালী প্রতিনিধি, চ্যানেল আই ও দৈনিক ভোরের কাগজ
নিয়মিত লেখক, নোয়াখালী ওয়েব

Tuesday, September 23, 2008

পৃষ্ঠপোষকতা পেলে বিজেম হবে গণযোগাযোগ ও সাংবাদিকতা শিক্ষার একটি আর্দশ প্রতিষ্ঠান -নির্বাহী পরিচালক মির্জা তারেকুল কাদের



সাংবাদিকতাসহ গণযোগাযোগের সকল শাখায় মানসম্পন্ন শিক্ষা ও প্রশিক্ষণের অঙ্গীকার নিয়ে ২০০৩ সালে প্রতিষ্ঠিত হয় বাংলাদেশ ইনস্টিটিউট অব জার্নালিজম অ্যান্ড ইলেক্ট্রনিক মিডিয়া (বিজেম)। আধুনিক শিক্ষা, প্রশিক্ষণ, প্রকাশনা ও গবেষণামূলক এ প্রতিষ্ঠানটি প্রতিষ্ঠিত হয় সম্পূর্ণ বেসরকারী উদ্যোগে। ২০০৪ সালে জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ে পোস্ট গ্র্যাজুয়েট ডিপ্লোমা ইন জার্নালিজম বিষয়ে অধিভুক্ত এ প্রতিষ্ঠানটি গণমাধ্যম বিষয়ে বাংলাদেশের প্রথম বেসরকারি ইনস্টিটিউট। বৃহত্তর নোয়াখালীর (লক্ষ্মীপুর জেলার, রামগঞ্জ উপজেলা) কৃতি সন্তান সাংবাদিক, জনসংযোগবিদ, বিশিষ্ট লেখক ও গবেষক মির্জা তারেকুল কাদের এ ইনস্টিটিউটের প্রতিষ্ঠাতা ও নির্বাহী পরিচালক হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন। সমপ্রতি নোয়াখালী ওয়েবের সম্পাদক খালেদ সাইফুল্যাহ 'বিজেম' নিয়ে কথা বলেন নির্বাহী পরিচালক মির্জা তারেকুল কাদেরের সাথে। এ প্রসঙ্গে নিয়ে তিনি জানান, বিজেম পরিচালিত 'সাংবাদিকতায় স্নাতকোত্তর ডিপ্লোমা' দেশে সাংবাদিকতা শিক্ষার প্রসারে ও কর্মসংস্থানের ক্ষেত্রে বিশেষ অবদান রাখছে। এছাড়া স্বল্প মেয়াদী অন্যান্য কোর্স সম্পন্ন করেও শিক্ষার্থীদের অনেকেই বেকারত্বের দূর্বিসহ যন্ত্রণা থেকে মুক্তি পেয়েছেন। তিনি বলেন, কোন প্রকার সরকারী অনুদান ছাড়াই এ ইনস্টিটিউট গত ৫ বছরে যে সাফল্য অর্জন করেছে তা সম্পূর্ণরুপে ব্যক্তি উদ্যোগেই হয়েছে। আমরা এ ইনস্টিটিউটকে গণযোগাযোগ ও সাংবাদিকতা শিক্ষার একটি আর্দশ ও পূর্ণাঙ্গ প্রতিষ্ঠান হিসেবে গড়ে তোলার চেষ্টা করছি। কিন্তু প্রতিনিয়ত আমাদেরকে মোকাবিলা করতে হচ্ছে আর্থিক সমস্যাসহ বিভিন্ন ধরনের সমস্যা। আমরা এখনো বাংলাদেশ সরকার অথবা বিদেশী দাতা সংস্থাগুলো হতে কোন প্রকার অনুদান বা সাহায্য পাইনি। ইলেক্ট্রনিক সাজসরঞ্জামের অভাবে প্রশিক্ষণ কার্যক্রমও ব্যাহত হচ্ছে। সরকারী পৃষ্ঠপোষকতা, বিদেশী সাহায্য, এবং বিদ্যেৎসাহী ও সংস্কৃতিমনা দানশীল ব্যক্তিদের সহযোগিতা পেলে এ ইনস্টিটিউটকে গণযোগাযোগ ও সাংবাদিকতা শিক্ষার একটি আর্দশ প্রতিষ্ঠান হিসেবে গড়ে তোলা সম্ভব বলে জানালেন নির্বাহী পরিচালক। তিনি আরো জানান, ইনস্টিটিউট পরিচালনার জন্য রয়েছে একটি গভর্নিং বডি ও একটি উপদেষ্টা পরিষদ। গভর্নিং বডির চেয়ারম্যান হিসেবে রয়েছেন বিশিষ্ট শিল্পপতি, বিদোৎসাহী ও সমাজসেবক জনাব আনোয়ার হোসেন চৌধুরী। গভর্নিং বডির সদস্য হিসেবে রয়েছেন শিল্পপতি জনাব এস.এম.এমদাদুল ইসলাম ও শিল্পপতি জনাব নিসার আহমেদ। উপদেষ্টাদের মধ্যে রয়েছেন সাবেক রাষ্ট্রদূত আকরামুল কাদের, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের গণযোগাযোগ ও সাংবাদিকতা বিভাগের সাবেক চেয়ারম্যান অধ্যাপক ড. সাখাওয়াত আলী খান, জাতীয় প্রেস ক্লাবের সাবেক সভাপতি ও দি নিউজ টুডে সম্পাদক জনাব রিয়াজ উদ্দিন আহমেদ, এটিএন বাংলার চীফ এ্যাডভাইজার জনাব সাইফুল বারী এবং জাতীয় প্রেস ক্লাবের সভাপতি জনাব শওকাত মাহমুদসহ আরো কয়েকজন বিশিষ্ট গণমাধ্যম ব্যক্তিত্ব, শিক্ষাবিদ ও বিদোৎসাহী।
ইনস্টিটিউটের লক্ষ্য : এ ইনস্টিটিউট প্রতিষ্ঠার মূল লক্ষ্য হচ্ছে দেশে সাংবাদিকতা, জনসংযোগ, তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি, সম্পাদনা ও প্রকাশনা, চলচ্চিত্র, বিজ্ঞাপনকলা, ফটোগ্রাফী প্রভৃতি বিষয়ে কর্মমুখী, আধুনিক এবং মানসম্পন্ন শিক্ষা ও প্রশিক্ষণ, মৌলিক গবেষণা পরিচালনা এবং উল্লেখিত বিষয়ের উপর গ্রন্থ ও জার্নাল প্রকাশ করা। সাংবাদিকতায় স্নাতকোত্তর ডিপ্লোমা (পোস্ট গ্র্যাজুয়েট ডিপ্লোমা ইন জার্নালিজম) : জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের অধীনে ২০০৪-৫ শিক্ষাবর্ষ হতে বিজেম সাংবাদিকতায় ডিপ্লোমা কোর্স চালু করে। প্রথম ব্যাচে ৪ জন ছাত্রীসহ মোট ৩৭ জন শিক্ষার্থী কোর্সটি সম্পন্ন করেছে।
প্রশিক্ষণ কোর্স : ডিপ্লোমা ছাড়াও এই ইনস্টিটিউট ইতোমধ্যে সাংবাদিকতা এবং গণযোগাযোগের বিভিন্ন বিষয়ে বেশ কয়েকটি প্রশিক্ষণ কোর্স সফলভাবে সমাপ্ত করেছে। এসব কোর্সের মধ্যে রয়েছে, বেতার ও টেলিভিশনে সংবাদ উপস্থাপনা, টেলিভিশন সাংবাদিকতা, আধুনিক জনসংযোগ ও জনসংযোগের কলাকৌশল, ফ্রি-ল্যান্স সাংবাদিকতা, কলাম লেখার কলাকৌশল, প্রেস রিলিজ লিখন কৌশল ও ছবি সম্পাদনা, ফটো সাংবাদিকতা ও ডিজিটাল ফটোগ্রাফী, লেখালেখির কলাকৌশল, স্পোকেন ইংলিশসহ অন্যান্য কোর্স। এসব কোর্সের প্রত্যেকটিই শিক্ষার্থীদের কাছে বিশেষভাবে সমাদৃত হয়েছে। অর্জন ও
সাফল্য : প্রশিক্ষণ প্রদানের ক্ষেত্রে বিজেম ইতোমধ্যে বিরাট সাফল্য অর্জন করেছে। বিগত ৫ বছরে কোন প্রকার সরকারি ও বিদেশী দাতা সংস্থার সাহায্য-সহযোগিতা ছাড়াই এই প্রতিষ্ঠান ২ হাজার ৫শ' শিক্ষার্থীকে বিভিন্ন বিষয়ে প্রশিক্ষণ প্রদান করেছে। প্রশিক্ষণ লাভকারীদের মধ্যে রয়েছেন চাকুরীজীবী, বিশ্ববিদ্যালয় ও কলেজের ছাত্র-ছাত্রী, জনসংযোগ কর্মকর্তা, গৃহিনী, সরকারী ও বেসরকারী কর্মকর্তা। এদের প্রায় ১শ' জন এখন বিটিভি, এনটিভি, এটিএন বাংলা, ইটিভি, আরটিভি, চ্যানেল আই, চ্যানেল ওয়ান, বৈশাখী টেলিভিশন, বাংলাভিশন, দিগন্ত টিভিসহ অন্যান্য স্যাটেলাইট চ্যানেলগুলোতে এবং বাংলাদেশ বেতার ও বেসরকারী রেডিওতে টিভি সাংবাদিকতা, সংবাদ উপস্থাপনা, অনুষ্ঠান উপস্থাপক হিসেবে কাজ করছেন। এছাড়া শতাধিক শিক্ষার্থী বিভিন্ন জাতীয় সংবাদপত্রে স্টাফ রিপোর্টার, কন্ট্রিবিউটর, কলামিস্ট, ফ্রি-ল্যান্স সাংবাদিক ও লেখক হিসেবে কাজ করছেন; যা প্রশিক্ষণের ক্ষেত্রে এ ইনস্টিটিউটের সফলতাই প্রমাণ করে।
প্রকাশনা ও গবেষণা : প্রকাশনা ও গবেষণা ক্ষেত্রে বিজেম ইতোমধ্যে 'জনসংযোগ ও প্রকাশনা' শীর্ষক একটি বৃহৎ সংকলন গ্রন্থ (৫২০ পৃষ্ঠা) প্রকাশিত হয়েছে। এটি সম্পাদনা করেছেন ইনস্টিটিউটের নির্বাহী পরিচালক মির্জা তারেকুল কাদের। এছাড়া প্রকাশিত হয়েছে 'পাবলিক রিলেসন্স এন্ড মিডিয়া ডাইরেক্টরী' (২০০৪ ও ২০০৫)। এ ২টি প্রকাশনাই সুধীজন ও পাঠক কর্তৃক ব্যাপকভাবে সমাদৃত হয়েছে।
রিসোর্স পার্সন ও প্রশিক্ষক : কোর্স পরিচালনার জন্য ইনস্টিটিউটের রয়েছে দক্ষ, অভিজ্ঞ এবং দেশ-বিদেশে প্রশিক্ষণ প্রাপ্ত উচ্চ শিক্ষিত প্রশিক্ষক। নিজস্ব প্রশিক্ষক ছাড়াও অন্যান্য প্রশিক্ষকবৃন্দের মধ্যে রয়েছেন: প্রিন্ট ও ইলেক্ট্রনিক মিডিয়ায় কর্মরত স্বনামধন্য সাংবাদিকবৃন্দ, বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ে সাংবাদিকতা বিভাগের শিক্ষক, খ্যাতনামা সংবাদ উপস্থাপক ও টিভি ব্যক্তিত্ব, প্রখ্যাত লেখক, উচ্চারণ বিশেষজ্ঞ, ক্যামেরাম্যান, ভিডিও এডিটর এবং তথ্য ও যোগাযোগ বিশেষজ্ঞগণ।
শিক্ষার্থীদের প্রাপ্ত সুবিধা সমূহ : ইনস্টিটিউটের রয়েছে মাল্টিমিডিয়া প্রজেক্টর, কম্পিউটার, ল্যাপটপ, সনি হ্যান্ডিক্যাম, প্যানাসনিক ডিভি ক্যাম, ওভার হেড প্রজেক্টরসহ আধুনিক ইলেক্ট্রনিক সরঞ্জামাদি, সাউন্ড সিস্টেম, শীতাতপ নিয়ন্ত্রিত কনফারেন্স রুম ও ক্লাশ রুম। এছাড়াও রয়েছে দেশী-বিদেশী বইয়ে সম্মৃদ্ধ আধুনিক লাইব্রেরীসহ ইন্টারনেট সুবিধা। আর্থিকভাবে অসচ্ছল কিন্তু মেধাবী এমন ছাত্র-ছাত্রী, লেখক ও সাংবাদিকদের জন্য রয়েছে বিশেষ ব্যবস্থা। এ ক্ষেত্রে কতৃপক্ষ কোর্স ফি'র একটি নির্দিষ্ট অংশ ছাড় দিয়ে প্রশিক্ষণ গ্রহণে ইচ্ছুক শিক্ষার্থীদের প্রশিক্ষণ প্রদান ও উৎসাহিত করে। ভবিষ্যৎ
কর্মপন্থা : সাংবাদিকতায় ডিপ্লোমা ছাড়াও ভবিষ্যতে বিজেম আরো কয়েকটি কোর্স পরিচালনার পরিকল্পনা করছে। এর মধ্যে একটি হলো গ্রন্থাগার ও তথ্য বিজ্ঞানে মাস্টার্স কোর্স চালু। এছাড়া ডিজিটাল ভিডিও এডিটিং, ক্যামেরা অপারেশন্স, ডিজিটাল ফটোগ্রাফি, বিজ্ঞাপনকলা, চলচ্চিত্র নির্মাণ, সম্পাদনা ও প্রকাশনার কলাকৌশল, তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি প্রভৃতি বিষয়ে নতুন নতুন প্রশিক্ষণ কোর্স প্রদানের লক্ষ্যে প্রস্তুতি নেয়া হচ্ছে।
যোগাযোগ, নির্বাহী পরিচালক, বিজেম, ২৫৭/৮ এলিফ্যান্ট রোড, কাটাবন ঢাল, ঢাকা-১২০৫। ফোন : ৮৬১৭৯১২, ৯৬৭৪২২৪

Friday, September 12, 2008

বৃহত্তর নোয়াখালীর সংবাদ, সাংবাদিকতা ও সংবাদপত্রের উন্নয়নে নোয়াখালী ওয়েব

 www.noakhaliweb.com.bd :: নোয়াখালী বাংলাদেশের ঐতিহ্যবাহী একটি জেলা। প্রশাসনিক ভাবে বর্তমানে নোয়াখালী (নোয়াখালী, ফেনী, লক্ষ্মীপুর) তিন জেলায় বিভক্ত হলেও এ অঞ্চলের মানুষের কৃষ্টি কালচার একই রকম এবং সারাবিশ্বে 'নোয়াখাইল্লা' হিসাবেই এ অঞ্চলের মানুষ বিশেষভাবে পরিচিত। মেধাবী ও সৃষ্টিশীল হিসাবে এ অঞ্চলের মানুষের রয়েছে বিশ্ব স্বীকৃতি। শিক্ষা, সাহিত্য, সংস্কৃতি, প্রশাসন, ব্যবসা-বানিজ্য সর্বক্ষেত্রে নোয়াখালীর মানুষের অবদান অনস্বীকার্য। কথিত আছে জাতীয় অর্থনীতির ৩৫% নিয়ন্ত্রন করে নোয়াখালীর লোকজন। শুধু দেশে নয় বিদেশেও সমান কৃতিত্বের সাথে নোয়াখালীর মানুষ বরাবরের মত বিশেষ অবদান রেখে যাচ্ছে। জীবন জীবিকার প্রয়োজনে দেশে এবং বিশ্বের সর্বত্র এ অঞ্চলের মানুষ ছড়িয়ে ছিটিয়ে আছে। কিন্তু যে যেখানেই অবস্থান করুকনা না কেন নিজ এলাকার প্রতি টান এ অঞ্চলের মানুষের মাঝে বিশেষভাবে পরিলক্ষিত হয়। ফলে বৃহত্তর এ জনগোষ্ঠীর তথা বৃহত্তর নোয়াখালীর মানুষকে স্থানীয় ও কমিউনিটির খবরা-খবর তাৎক্ষণিকভাবে প্রদান করার লক্ষ্য নিয়ে সাংবাদিক খালেদ সাইফুল্যাহ'র ব্যক্তিগত উদ্যোগে ২০০৫ সালে অনলাইন পত্রিকা নোয়াখালী ওয়েবের যাত্রা শুরু হয়।

নোয়াখালী ওয়েব যখন কাজ শুরু করে তখন বাংলাদেশে অনলাইন পত্রিকার ধারনাটা একেবারেই নতুন এবং তখন পর্যন্ত বিডিনিউজ২৪.কম অনলাইনে তাদের নিউজ প্রকাশ করত। এজন্য প্রায় ১ বছর নোয়াখালী ওয়েব মানুষের মাঝে ইয়াহু অনলাইন গ্রুপ পরিচালনা সহ বিভিন্ন কার্যক্রমের মধ্য দিয়ে শুধুমাত্র অনলাইন পত্রিকা সম্পর্কে ধারণা/সচেতনতা তৈরী করার জন্য কাজ করে। ২০০৬ সালের শুরু থেকে পত্রিকাটি নিউজ প্রকাশনা শুরু করে। সংবাদ প্রকাশনা শুরু করার খুব অল্প সময়ের মধ্যে নোয়াখালী ওয়েব বৃহত্তর নোয়াখালীসহ বাংলাদেশের মানুষের কাছে বিশেষভাবে প্রবাসী বাংলাদেশীদের কাছে ব্যাপক জনপ্রিয়তা অর্জন করে। উল্লেখ্য বাংলাদেশের অঞ্চলভিত্তিক এটাই প্রথম কোন অনলাইন পত্রিকা যারা ২৪ ঘন্টা সংবাদ প্রদান করছে। অনলাইনে সংবাদ প্রকাশের পাশাপাশি বর্তমানে নোয়াখালী ওয়েব স্থানীয় দৈনিক/সাপ্তাহিক/মাসিক পত্রিকাগুলোকে ফ্রি! নিউজ সার্ভিস প্রদান করছে। এতে করে স্থানীয় পত্রিকাগুলো আরো বেশি তথ্য সমৃদ্ধ হচ্ছে। ইতোমধ্যে বৃহত্তর নোয়াখালীর প্রথম দৈনিক জাতীয় নিশান, দৈনিক লক্ষ্মীপুর কন্ঠ, সাপ্তাহিক নোয়াখালী কন্ঠ সহ বেশ কয়েকটি পত্রিকা নোয়াখালী ওয়েব'র নিউজ সার্ভিস গ্রহণ করছে।

২০০৭ এর ১৫ই আগষ্ট নোয়াখালী ওয়েব এর সাইটটি হ্যাকার দ্বারা আক্রান্ত হয়। নোয়াখালী ওয়েব এর অগ্রযাত্রায় ইশ্বান্বিত হয়ে স্থানীয় ও আন্তজার্তিক একটি গোষ্ঠী নোয়াখালী ওয়েবসাইট কে আক্রমন করে এবং সাইটে পর্ণ ছবি জুড়ে দেয়। যা তখকার সময়ে ব্যাপক মানসিক বিপর্যয়ের কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছিল। এ নিয়ে তখন বিভিন্ন জাতীয় ও স্থানীয় দৈনিকে ফলাওভাবে সংবাদ প্রকাশিত হয়েছিল। ১৫ দিন বন্ধ থাকার পর ১ সেপ্টেম্বর ২০০৭ থেকে নতুন ওয়েব ঠিকানায় নোয়াখালী ওয়েবের পূনরায় প্রকাশনা শুরু হয়। দেশ বিদেশে বৃহত্তর নোয়াখালীর অগনিত মানুষের অকুন্ঠ ভালোবাসায় মাত্র ছয়মাসের মধ্যে নোয়াখালী ওয়েব আগের তুলনায় আরো অনেক বেশি পাঠক প্রিয়তা অর্জন করে। ইতোমধ্যে পাঠক চাহিদার কথা বিবেচনা করে নোয়াখালী ওয়েব স্থানীয় সংবাদের পাশাপাশি জাতীয় সংবাদও প্রকাশ করা শুরু করে। এতে করে বৃহত্তর নোয়াখালীর বাহিরে অন্যান্য জেলার মানুষের কাছেও নোয়াখালী ওয়েব ব্যাপক জনপ্রিয়তা অর্জন করে। ফলশ্রুতিতে বর্তমানে বিশ্ববিখ্যাত এলাক্সা র্যাংকিং অনুযায়ী নোয়াখালী ওয়েব বাংলাদেশের দ্বিতীয় বৃহত্তম অনলাইন পত্রিকা (প্রথম : বিডিনিউজ২৪.কম, তৃতীয় : দি-এডিটর)। যা নোয়াখালীবাসীর জন্য গর্ব করার মত একটা বিষয়।

আপনার এলাকা, আপনার সংবাদ এ শ্লোগানকে ধারণ করে বর্তমানে নোয়াখালী ওয়েবের পাঠক সংখা দৈনিক প্রায় ২১,০০০ (একুশ হাজার, গত ছয় মাসের হিসাব অনুযায়ী) এবং প্রতিদিন এ সংখ্যা বাড়ছে। গত ১ এপ্রিল ২০০৮ থেকে নোয়াখালী ওয়েব পাঠকদের জন্য নিবন্ধন সিস্টেম চালু করলে বর্তমানে প্রায় ২০০০ পাঠক নিবন্ধিত হয়েছেন। এ পাঠক সংখার ৩০% আমেরিকা থেকে, ৩৫% মধ্যপ্রাচ্য থেকে এবং বাংলাদেশ ও অন্যান্য দেশ থেকে ৩৫%।

নোয়াখালী ওয়েব এর লক্ষ্য ও উদ্দেশ্য : (১) বৃহত্তর নোয়াখালীর স্থানীয় এবং দেশ বিদেশের বৃহত্তর নোয়াখালীর কমিউনিটির খবর তাৎক্ষনিকভাবে অনলাইনে প্রকাশ করা। এক্ষেত্রে পত্রিকাটির সম্পাদকীয় নীতি হচেছ বেশি বেশি ইতিবাচক সংবাদ প্রকাশ করা, যে সংবাদ মানুষের মাঝে অনুপ্রেরণা যোগায়। (২) স্থানীয় পত্রিকাগুলোর মান উন্নোয়নে ফি! নিউজ সার্ভিস প্রদানের মধ্যদিয়ে তাদের প্রকাশনায় সহায়তা করা এবং স্থানীয় ও জাতীয় বিভিন্ন ইস্যু যেমন শিক্ষা, কৃষি, স্বাস্থ্য, তথ্য প্রযুক্তি, মানবাধিকার, প্রাকৃতিক দূর্যোগ ইত্যাদি বিষয়ে সমন্বিত লেখা প্রকাশ ও বিভিন্ন কার্যক্রমের মধ্যদিয়ে স্থানীয় জনসাধারণকে সচেতন করে তোলা। যাতে করে জনসাধারণ গণ মাধ্যমের সত্যিকারের সুফল ভোগ করতে পারেন। (৩) দেশে এবং বিদেশে বৃহত্তর নোয়াখালীর মানুষে মানুষে, কোথাও কোথাও সংগঠনের সাথে সংগঠনের, ব্যবসা প্রতিষ্ঠানের সাথে ব্যাবসা প্রতিষ্ঠানের সেতু বন্ধন তৈরী করা যাতে করে আঞ্চলিক উন্নয়ন সহজ থেকে সহজতর হয়।

সবমিলিয়ে দেশে বিদেশে বৃহত্তর নোয়াখালীর মানুষের তাৎক্ষনিক তথ্য পাওয়ার অধিকার নিশ্চিত করাসহ নোয়াখালী ওয়েবের কমন ফ্লাটফর্মে বৃহত্তর নোয়াখালীর কমিউনিনিটিকে শক্তিশালী করা নোয়াখালী ওয়েবের প্রধান লক্ষ্য ও উদ্দেশ্য। যার মধ্য দিয়ে দেশে বিদেশে নোয়াখালীর মানুষ সম্পকে নেতিবাচক ধারনার পরিবর্তন হয়ে সবসময় ইতিবাচক ধারনা তৈরী হবে। এতে করে আমরা নোয়াখালীবাসীর স্বর্কীয়তা, নিজস্ব সংস্কৃতির ভালোদিকগুলো সবার সামনে সঠিকভাবে উপস্থাপিত হবে। এছাড়া নোয়াখালী ওয়েব নিয়মিত এককভাবে অথবা নিউজ পার্টনারদের সাথে যৌথভাবে শিক্ষা, স্বাস্থ্য, কৃষি ক্ষেত্রে তাদের সচেতনতামূলক, সভা, সেমিনার, গোল টেবিল আলোচনা, কর্মশালা ও বিভিন্ন ধরনের প্রতিযৌগিতার আয়োজন করবে।
নোয়াখালী ওয়েব যেহেতু অনলাইন ভিত্তিক পত্রিকা সেহেতু ইন্টারনেটের প্রসার এর সাথে সাথে নোয়াখালী ওয়েবের অগ্রযাত্রা অনেকটাই নির্ভরশীল। আমাদের প্রবাসী ভাইয়েরা অনেকেই এখন ইন্টারনেট ব্যবহার করলেও স্থানীয়ভাবে ইন্টারনেট ব্যবহারকারীর সংখ্যা আনুপাতিক হারে অনেক কম। ২০০৬ সালে গ্রামীন ফোন যখন প্রত্যন্ত অঞ্চলে ইন্টারনেট প্রসারের লক্ষ্যে কমিউনিটি ইনফরমেশন সেন্টার (সিআইসি) এর কাজ শুরু করে তখন নোয়াখালী ওয়েব বৃহত্তর নোয়াখালীতে ইন্টারনেট প্রসারের জন্য সিআইসির পার্টনার হিসাবে কাজ করে। এসকল কাজের ধারাবাহিকতায় ২০০৭ সালের শেষ পর্যন্ত পুরো বৃহত্তর নোয়াখালীতে ইন্টারনেট এর ভালো একটা ইউজার/পাঠক গোষ্ঠী তৈরী হয়েছে।

সহযোগী পোর্টাল : নোয়াখালী ওয়েবের সহযোগী পোর্টাল http://www.greaternoakhali.com.bd/ তে বৃহত্তর নোয়াখালীর জেলা টু গ্রাম পর্যন্ত সব ধরনের ইনফরমেশন প্রকাশ করা হবে। যেখান প্রতিটি জেলার ইতিহাস, মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাস, মানচিত্র, এখানকার ঐতিহ্য, বিশেষ ব্যক্তিদের প্রোপাইল 'আমাদের কৃতি সন্তান', প্রবাসীদের জন্য 'আমরা প্রবাসী' ডাটাবেইজ, সাধারণ মানুষের জন্য 'পাবলিক ডিরেক্টরি' এবং প্রাতিষ্ঠানিক অন্যান্য সব ধরনের তথ্য থাকবে, যা সার্বক্ষণিক ভাবে আপডেট হবে। এ কার্যক্রম বাস্তবায়নে কয়েক বছর সময় লাগলেও আমাদের বর্তমান ও পরবর্তী প্রজম্ম এর মধ্য দিয়ে অনলাইনে বৃহত্তর নোয়াখালীর একটি পূর্ণাঙ্গ তথ্য ভান্ডার পাবে বলে নোয়াখালী ওয়েব বিশ্বাস করে।

সহযোগী প্রকাশনা : শুধু অনলাইন নয় অফলাইনের মানুষদেরকেও সঠিক তথ্য সেবা প্রদান করা এবং এ অঞ্চলের নতুন লেখক সৃষ্টির লক্ষে 'নোয়াখালী ওয়েব' অফলাইন নামে একটি মাসিক ম্যাগাজিন প্রকাশের উদ্যোগ নিয়েছে। যেখানে বৃহত্তর নোয়াখালীর প্রতিদিনকার সংবাদ প্রবাহ ছাড়াও এ অঞ্চলের শিক্ষা, সাহিত্য, সংস্কৃতি, ঐতিহ্য, ইতিহাস, মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাস, আমাদের কৃতি সন্তানসহ নিত্যনতুন বিভাগ সমৃদ্ধ হয়ে ম্যাগাজিনটি শীঘ্রই নিয়মিতভাবে পাঠকের হাতে পৌঁছবে।
ব্যাবস্থাপনা : সম্পাদকীয় বোর্ড কতৃক নোয়াখালী ওয়েব'র মূল ব্যবস্থাপনা পরিচালিত হচ্ছে। তবে পত্রিকাটির মানোন্নয়নে বিভিন্ন পরামর্শ ও সহায়তা প্রদানের লক্ষ্যে পত্রিকাটির একটি শক্তিশালী উপদেষ্টা পরিষদ গঠনের কাজ চলছে। সাবেক কুটনৈতিক জনাব এস এম রাশেদ আহমেদ চৌধুরী, বিশিষ্ট শিল্প উদ্যোক্তা জনাব মোহাম্মদ ইউসুফ কে ইতোমধ্যে এ পরিষদে মনোনয়ন দেয়া হয়েছে। নোয়াখালী, ফেনী, লক্ষীপুর তিন জেলার জাতীয় ও আন্তর্জাতিকভাবে সুনাম অর্জনকারী এবং নিজ এলাকার উন্নয়নে আন্তরিক এরকম ১৫-২১ জনের সমন্বয়ে এ উপদেষ্টা পরিষদ গঠিত হবে এবং প্রতিবছর এ পরিষদ নতুনভাবে /পূণঃ মনোনীত হবে।

জনবল : দেশে এবং বিদেশে নোয়াখালী ওয়েব এর বর্তমান সাংবাদিক ও কর্মকর্তা-কর্মচারী ৫৫ জন।

ব্যয় নির্বাহ : নোয়াখালী ওয়েব ডিজিটাল ডেভেলপমেন্ট ফাউন্ডেশন (ডিডিএফ) এর অধীনে একটি অলাভজনক প্রকল্প। শুরু থেকে নোয়াখালী ওয়েবের প্রতিষ্ঠাতা সম্পাদক এর ব্যক্তিগত ও পরবর্তীতে তার পরিচালনাধীন ডিডিএফ এর অর্থায়নে এখন পর্যন্ত নোয়াখালী ওয়েবের ব্যয় নির্বাহ চলে আসছে। তবে প্রকল্পটিকে টেকসই করার লক্ষে নোয়াখালী ওয়েব একটি সহযোগী পরিবার গঠনের কাজ শুরু করছে। মূলত সহযোগী পরিবারের সদস্যদের মেম্বারশীপ ফি এবং কিছু বানিজ্যিক প্রতিষ্ঠানের বিজ্ঞাপন প্রকাশের মাধ্যমে পত্রিকা/সংবাদ মাধ্যমটির ব্যয় নির্বাহ করার পরিকল্পনা রয়েছে। এক্ষেত্রে সকলের সহযোগীতা একান্ত কাম্য।

পরিশেষে আপনার প্রতিষ্ঠানের/সংগঠনের ইতিবাচক কর্মকান্ডের খবর পাঠিয়ে নোয়াখালী ওয়েবের প্রকাশনাকে সমৃদ্ধ করার আহবান রইল।

সম্পাদকীয় কার্যালয় : ৮৪/৭ নয়াপল্টন (চতুর্থতলা), ঢাকা-১০০০। ফোন-ফ্যাক্স : ৮৮০ ২ ৮৩১১৫৩৭, মোবাইল : ০১৯১৬৫৫৩৩৬৬

Sunday, August 17, 2008

হ্যাকার আক্রান্ত নোয়াখালী ওয়েব! সাইবার ক্রাইমের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়া জরুরী


১৫ আগষ্ট জাতীয় শোক দিবস । অনলাইন পত্রিকা নোয়াখালী ওয়েব এর জন্যও এটি একটি কালো দিবস। ২০০৭ সালের এদিনে নোয়াখালী ওয়েব স্থানীয় ও আন্তর্জাতিক একটি হ্যাকার চক্রের কবলে পড়ে আক্রান্ত হয়েছিল। সেদিন আসলে কি ঘটেছিল তা আজকের নোয়াখালী ওয়েবের অগনতি পাঠকের কাছে অজানা। পাঠকরা যাতে বিষয়টি সঠিকভাবে জানতে পারে এবং এ বিষয়ে সতর্ক থাকতে পারে সেজন্য সেদিনের ঘটনা নিয়ে লিখেছেন, মোহাম্মদ মোস্তাফিজুর রহমান-

২০০৭ সালের ১৫ আগষ্ট বুধবার দেশীয় কিছু চোর আর আন্তর্জাতিক একজন হ্যাকারের কবলে পড়ে নোয়াখালী ওয়েব। জানা যায়, ঘটনার দিন সন্ধায় নোয়াখালী ওয়েব’র সম্পাদকের ব্যক্তিগত ইমেইল এড্রেসটি হ্যাকিং (চুরি) হয়ে যায়। যেহেতু এই ইমেইল এড্রেসটি সম্পাদকদের মালিকানাধীন তথ্য প্রযুক্তি বিষয়ক প্রতিষ্ঠান টেকনোল্যান্ডের ডোমেইন এবং হোস্টিং কোম্পানীতে এডমিন ইমেইল হিসাবে ব্যবহৃত সেহেতু টেকনোল্যান্ডের ডোমেইন সাইট এবং হোস্টিং এর কন্ট্রোল ও হ্যাকার এর কবলে পড়ে। এতে করে নোয়াখালী ওয়েব এবং নোয়াখালী ওয়েব অনলাইন গ্রুপ সহ টেকনোল্যান্ডের তৈরী করা বেশ কিছু কর্পোরেট ওয়েবসাইট বন্ধ হয়ে যায়। যাদের মধ্যে বাংলাদেশের অন্যতম একটি সংগঠন বাংলাদেশ ক্যবল অপারেটর এসোসিয়েশন অব বাংলাদেশ (কোয়াব), বাংলাদেশ ক্যাবল টিভি দর্শক ফোরাম, ট্রান্স কন্টিনেন্টাল শিপিং লাইন লিমিটেড, রাইটক্লিক লিমিটেড, এ্যালোহা আইশপ, ডব্লিও এনবি নিউজ ইত্যাদি। হ্যাকার কতৃক আক্রান্ত হওয়ার পর সবগুলো ওয়েব সাইট এর ডাটাবেইজ মুছে ফেলে দিয়ে পর্ণো ওয়েব সাইট লিংক করে দেয়া হয় সেদিন। এতে করে করে একদিকে যেমন লক্ষ লক্ষ টাকার ক্ষতি হয়েছে পাশাপাশি পর্ণোসাইট প্রদর্শিত হওয়ায় ওয়েবসাইট গুলোর সাথে জড়িত ভিজিটররা বিভ্রান্ত হয়েছে। এছাড়া ঐ সময় যারা এ ওয়েবসাইটগুলো ব্রাউজ করছিলেন তাদের স্ব স্ব কম্পিউটার ভাইরাস আক্রান্ত হয়েছিল। আরেকটি ব্যাপার ছিল হ্যাকিং হওয়া ইমেইলটি ব্যবহার করে টেকনোল্যান্ড এর সকল ক্লাইন্ট , নোয়াখালী ওয়েব এর সকল পাঠক এবং হ্যাকিং হওয়া ইমেইলের মধ্যে স্টোরেজ করা সকল ঠিকানায় একটি ইমেইল প্রেরণ করা হয় সেদিন। যাতে টেকনোল্যান্ড এর প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা ও নোয়াখালী ওয়েবের সম্পাদক সম্পর্কে বিভ্রান্তি চড়ানো হয়। শুধু তাই নয় ইমেইল এর সাথে এমন একটি লিংক প্রেরণ করা হয়েছিল সেদিন যাতে ক্লিক করা মাত্র মেইল প্রাপকের কম্পিউটার ভাইরাস দ্বারা আক্রান্ত হয়েছিল। তখন এ ব্যাপারে পল্টন থানায় একটি সাধারণ ডায়েরী করা হয়েছিল, যার নং ১১০১, তারিখ : ১৮/১/২০০৭ ইং এবং ১৯/৮/২০০৭ ইং তারিখে র‌্যাব-৩ এর কাছে একটি লিখিত অভিযোগ দায়ের করা হয়েছিল। এছাড়া সেনাবাহিনী প্রধান জনাব জেনারেল মইন উ. আহম্মেদ এর দৃষ্টি আকর্ষণ করে চিঠি দেয়া হয়েছিল সেদিন। ২১ আগষ্ট দৈনিক যুগান্তর এবং ২২ আগষ্ট দৈনিক আমাদের সময়ে এ সংক্রান্ত সংবাদ বিশেষ গুরুত্ব সহকারে প্রকাশিত হয়েছিল। থানার সাধারণ ডায়েরী এবং র‌্যাবের কাছে দেয়া লিখিত অভিযোগের বক্তব্য অনুসারে যে বিষয়টি তুলে ধরা হয়েছিল তার বক্তব্য ছিল, ‘কিছুদিন ধরে নোয়াখালীর একটি বেসরকারী উন্নয়ন সংস্থার প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা জনাব নুরুল আলম মাসুদ নোয়াখালী ওয়েব সম্পর্কে বিভিন্ন জনের কাছে বিষেদাগার ছড়িয়ে আসছেন। সমপ্রতি নোয়াখালীর আরেকটি উন্নয়ন সংস্থা এনআরডিএস এর প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তার ছেলে জনাব সুমিত আওয়াল নোয়াখালী যান এবং বিভিন্ন বিষয় নিয়ে নুরুল আলম মাসুদের সাথে বৈঠক করেন বলে বিশ্বস্ত সূত্রে জানা গেছে। এছাড়া জনাব সুমিত আওয়াল নিজেও নুরুল আলম মাসুদের সাথে বিভিন্ন বিষয়ে সমঝোতার কথা নোয়াখালী ওয়েব এর সম্পাদককে জানান। নোয়াখালী থেকে ফিরে আসার পর জনাব সুমিত আওয়াল আহমেদ নিতুল নামে পূর্ব পরিচিত আরেকজন ছেলে (ইসলামিক ফাউন্ডেশন এর ডিপুটি পরিচালক এর ছেলে) সহ ঘন ঘন নোয়াখালী ওয়েব অফিসে আসতে থাকেন এবং বিভিন্ন ছলছূতায় অফিসের কম্পিউটারে ইন্টারনেট ব্যবহার করেন। বিষয়টি নোয়াখালী ওয়েবের সম্পাদকের কাছে সন্দেহজনক মনে হলেও সৌজন্যের খাতিরে কিছু বলতে পারেননি। সর্বশেষ তারা যেদিন এসেছিলেন তার কিছুদিন পর ডেভিড রিক্যাচ নামে একজন আমেরিকান নোয়াখালী ওয়েব এ বিজ্ঞাপন দেয়ার কথা বলে সম্পাদক বরাবর একটি মেইল করে। সম্পাদক একটি অফার লেটার প্রেরণ করলে উক্ত ডেভিড জানায় সে নোয়াখালী ওয়েবের উন্নয়নের জন্য বিজ্ঞাপন দিবে। ঘটনার দিন সম্পাদক যখন বুঝতে পারে বিষয়টা সম্পূর্ণ মিথ্যা তথক্ষনে আন্তর্জাতিক হ্যাকার ডেভিড অনেককিছু তার দখলে নিয়ে নেয়। মিঃ সুমিত ব্যক্তিগত জীবনে ওয়েব হোস্টিং এর ব্যবসা করে (সরকারী অনুমোদন বিহীন প্রতিষ্ঠান)। বাংলাদেশে যারা ইন্টারনেট এক্সপার্ট তাদের মধ্যে মিঃ সুমিত এবং তার সহযোগী আহমেদ নিতুল অন্যতম। অবশ্য তাদের এ মেধা ভালো কোন কাজে ব্যবহার করা হয়না। উল্লেখ্য, মিঃ সুমিত এবং আহম্মেদ নিতুল বাংলাদেশে ইন্টারনেট হ্যাকার (চোর) দের যে গ্রুপ রয়েছে তার সক্রিয় সদস্য। যারা আবার আন্তর্জাতিক ক্র্যাডিট কার্ড হ্যাকার চক্রের সাথেও জড়িত বলে ধারণা করা হয়। ইন্টারনেটে সার্চ করলে তাদের সম্পর্কে অনেক বিস্তারিত তথ্য জানা যাবে। এছাড়া মিঃ সুমিত নোয়াখালী গ্রুপ নামে একটি ইয়াহু গ্রুপ পরিচালনা করে আসছেন ২০০৪ সাল থেকে। এদিকে নোয়াখালী ওয়েব গ্রুপ ২০০৬ সালে শুরু করলেও কার্যক্রম এবং সদস্যদের দিক দিয়ে নোয়াখালী গ্রুপ থেকে অনেকদূর এগিয়ে যায়। নোয়াখালী ওয়েব এবং নোয়াখালী ওয়েব অনলাইন গ্রুপের সাফল্যে ইর্ষাকাতর হয়ে এবং অভিযুক্ত নুরুল আলম মাসুদের প্ররোচণায় ও আর্থিক সহায়তায় মিঃ সুমিত এ ধরনের ধ্বংসাত্বক কার্যক্রমে লিপ্ত হয়েছে বলে সন্দেহ করা হয়। এক্ষেত্রে মিঃ সুমিত যেহেতু হ্যাকার চক্রের সাথে জড়িত সেহেতু আন্তর্জাতিক হ্যাকার ডেভিড এর সহায়তা নিয়েছে বলে ধারণা করা হয়। এছাড়া আহম্মেদ নিতুল নামে ছেলেটি, সে তথ্য পাচার এর দায়িত্বে ছিল বলে সম্পাদক মনে করেন। এ ঘটনার সময় প্রাণের নির্বাহী প্রধান নুরুল আলম মাসুদ ঢাকায় অবস্থান করছিলেন এবং বিভিন্ন জনকে ফোন করে ‘নোয়াখালী ওয়েব’ এর হ্যাকিং এর খবরটি দেয়ার ব্যাপারে উৎসাহী হয়ে উঠেন। এদিকে যেসময় নোয়াখালী ওয়েব সহ নোয়াখালী ওয়েব অনলাইন গ্রুপ আক্রান্ত হয় ঠিক একই সময়ে মিঃ সুমিত এর পরিচালনাধীন নোয়াখালী গ্রুপ এর নাম পরিবর্তন করে নোয়াখালী অনলাইন গ্রুপ রাখা হয় যা নোয়াখালী ওয়েব অনলাইন গ্রুপ এর সাথে সাঞ্জস্যপূর্ণ। ঘটনার আগে মিঃ সুমিত কারণে অকারণে নোয়াখালী ওয়েব অফিসে আসলেও ঘটনার পর একবার ও নোয়াখালী ওয়েব অফিসে আসেননি কিংবা সম্পাদককে ফোন করে সমবেধনাটুকুও জানাননি। এতে করে প্রতিয়মান হয় নোয়াখালী ওয়েব , নোয়াখালী ওয়েব অনলাইন গ্রুপ এবং অন্যান্য সাইটগুলো হ্যাকিং (চুরি) এর ব্যাপারে মিঃ সুমিত আওয়াল এবং মিঃ নুরুল আলম মাসুদ, আহম্মেদ নিতুল সম্পূর্ণ রুপে জড়িত। যেহেতু বাংলাদেশে কোন সাইবার ল' (আইন) নাই সুতরাং জড়িতদের বিরুদ্ধে কোন ব্যবস্থা নেয়া যায়নি।
‘নোয়াখালী ওয়েব এর মত একটি সামাজিক সেবামূলক সাইট বন্ধ করে দেয়ার চেষ্টা বৃহত্তর নোয়াখালীবাসীর মানুষদের বিরুদ্ধে একটি আঘাত ছিল সেদিন। শুধু নোয়াখালী ওয়েব নয়, পরবর্তীতে বাংলাদেশ কম্পিউটার সোসাইটির ওয়েবসাইট সহ বেশকিছু ওয়েবসাইট আক্রান্ত হওয়ার খবর পত্রিকায় প্রকাশিত হয়েছিল। কয়েকমাস আগে এক আন্তর্জাতিক সেমিনারে বাংলাদেশে সাইবার ক্রাইমের ভয়াবহতা তুলে ধরা হয়েছিল। সে থেকে বোঝা বাংলাদেশ অনেক বেশি সাইবার হুমকির মুখে রয়েছে। এতকিছুর পরও আমাদের সরকারের বিষয়টা নিয়ে এখনো টনক নড়েনি। এমতাবস্থায় সাইবার অপরাধীদের বিরুদ্ধে প্রয়োজনীয় আইন প্রণয়ন সহ পর্যাপ্ত ব্যবস্থা না নিলে বাংলাদেশ যেকোন সময় সাইবার বিপর্যয়ের মুখে পড়বে বলে আশংকা বিশেষজ্ঞ মহলের। -ডেস্ক রিপোর্ট, নোয়াখালী ওয়েব।

Monday, March 24, 2008

নিউজ এলার্ট সিস্টেম চালু করেছে 'নোয়াখালী ওয়েব'

অনলাইন পত্রিকা ও কমিউনিটি পোর্টাল 'নোয়াখালী ওয়েব' তাদের নিবন্ধিত পাঠকদের জন্য নিউজ এলার্ট সিস্টেম চালু করেছে। ফলে দেশ/বিদেশে ব্যাপক জনপ্রিয় পত্রিকাটির পাঠকরা এখন থেকে যেকোন গুরুত্বপূর্ণ খবর কিংবা লেখা সম্পর্কে তাদের ইমেইলে নিউজ এলার্ট পাবেন। নিত্য নতুন বিভাগ সমৃদ্ধ অনলাইন পত্রিকাটি নিয়মিত পড়ার জন্য এবং নিউজ এলার্ট পাওয়ার জন্য পাঠকদের অবশ্যই নিবন্ধন করতে হবে। তবে নিবন্ধন করা যাবে সম্পূর্ণ ফ্রি!। http://www.noakhaliweb.com.bd/

Sunday, February 24, 2008

কোম্পানীগঞ্জে ছবিসহ ভোটার রেজিষ্ট্রেশন কার্যক্রমের উদ্বোধন, নোয়াখালী ওয়েব সহ বিভিন্ন সংগঠনের অংশগ্রহনে ভোটার উদ্বুদ্ধকরন র‌্যালী


কোম্পানীগঞ্জ উপজেলায় শনিবার (২৩ ফেব্রুয়ারী) থেকে আনুষ্ঠানিকভাবে ছবিসহ ভোটার রেজিষ্ট্রেশন ও জাতীয় পরিচয়পত্র প্রনয়নের কাজ শুরু হয়েছে। এ উপলক্ষে সকাল ৯টায় উপজেলা চত্ত্বর থেকে এক বিরাট ভোটার উদ্বুদ্ধকরন র‌্যালী বসুরহাট বাজারের প্রধান প্রধান সড়ক প্রদক্ষিন করে। এতে বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের ছাত্রছাত্রী, অফিস, এনজিও, ব্যবসায়ীসহ সর্বস্তরের জনগন অংশ গ্রহন করে। পরে বসুরহাট ইসলামীয় সিনিয়র মাদ্রাসা কেন্দ্রে ছবি তুলে ভোটার রেজিষ্ট্রেশন কার্যক্রমের আনুষ্ঠানিক উদ্বোধন করেন এ কাজে দায়িত্বে নিয়োজিত মেজর আকতার। এ সময় উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মোঃ মুনির হোসেন খান, নির্বাচন কর্মকর্তা মোঃ জিল্লুর রহমান, বসুরহাট পৌরসভার চেয়ারম্যান কামাল উদ্দিন চৌধুরী, সাবেক চেয়ারম্যান আবদুল কাদের মির্জাসহ প্রশাসনিক কর্মকর্তাবৃন্দ উপস্থিত ছিলেন।

বসুরহাট একুশে মেলায় 'নোয়াখালী ওয়েব' পুরস্কৃত

আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস উপলক্ষে নোয়াখালীর কোম্পানীগঞ্জে পাচদিন ব্যাপী একুশে মেলার শেষ দিন বৃহস্পতিবার সমাপনী দিনে অনলাইন পত্রিকা ও কমিউনিটি পোর্টল 'নোয়াখালী ওয়েব'র স্টলকে বিশেষভাবে পুরস্কৃত করেছে মেলা উদযাপন কমিটি। এ ছাড়া কলেজ পর্যায়ে প্রথম পুরস্কার পেয়েছে সরকারি মুজিব কলেজ, ২য় পুরস্কার পেয়েছে বামনী কলেজ। মাধ্যমিক বিদ্যালয় পর্যায়ে প্রথম পুরস্কার পেয়েছে বসুরহাট সরকারি এএইচসি উচ্চ বিদ্যালয়, ২য় পুরস্কার পেয়েছে যোগিদিয়া বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়, ৩য় পুরস্কার পেয়েছে মাকসুদাহ সরকারি বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়। প্রাথমিক বিদ্যালয় পর্যায়ে প্রথম পুরস্কার পেয়েছে বসুরহাট একাডেমী, ক্রিসেন্ট প্রি ক্যাডেট স্কুল, শান্তিরহাট আইডিয়াল একাডেমী। প্রদর্শণী ও বিক্রয় কেন্দ্র পর্যায়ে প্রথম পুরস্কার পেয়েছে বসুরহাট কলেজ গেইটের শিক্ষা বিপনী, ২য় পুরস্কার পেয়েছে ইদ্রিছিয়া রোডের ওমেন্স গ্যালারী ও ৩য় পুরস্কার পেয়েছে কলেজ রোডের বিছমিল্লাহ ডেকোরেটর এন্ড গিফট কর্ণার।

বসুরহাট একুশে মেলার সমাপনী রাতে দর্শক মাতালেন কুষ্টিয়ার লালন শিল্পীরা

নোয়াখালীর কোম্পানীগঞ্জে পাচদিন ব্যাপী একুশে মেলার সমাপনী দিন বৃহস্পতিবার (২১ ফেব্রুয়ারী) বিকালে সমাপনী আলোচনা সভার আয়োজন করা হয়। এতে মেলা কমিটির সদস্য সচীব ও কোমপানীগঞ্জ সাংস্কৃতিক ফোরামের আহবায়ক শহীদ উদ্দিন বাবুলের সভাপতিত্বে প্রধান অতিথি ছিলেন, উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মোঃ মুনির হোসেন খান। বক্তব্য রাখেন, পৌর চেয়ারম্যান কামাল উদ্দিন চৌধুরী, ওসি রমজান হোসেন, সাবেক পৌর চেয়ারম্যান আবদুল কাদের মির্জা, উপজেলা আওয়ামীলীগ সভাপতি মুক্তিযোদ্ধা খিজির হায়ত খান, ভাষা আন্দোলনের সংগঠক বসুরহাট হাইস্কুলের সাবেক শিক্ষক আবুল হাসেম, নোয়াখালী মেইল সম্পাদক মকছুদের রহমান মানিক, কবিতা পরিষদের সভাপতি আবদুল হালিম রকি, নৃত্যকলা একাডেমীর সভাপতি হারুন অর রশিদ শাহেদ, অমর সাংস্কৃতিক সংস্থা সভাপতি বাবু অজয় আচার্য্য, মুক্ত সাংস্কৃতিক সংগঠনের সভাপতি শওকত আজিম জাবেদ প্রমুখ।মেলার শেষ রাতে দর্শক মাতালেন কুষ্টিয়ার লালন শিল্পীবৃন্দ। কুষ্টিয়ার লালন একাডেমীর সাংস্কৃতিক সম্পাদক মাহমুদুর রহমান আল কাদরীর নেতৃত্বে একদল শিল্পী এতে গান পরিবেশন করেন। শিল্পীদের মধ্যে লালন শাহ সিনেমার গায়িকা ফরিদা ইয়াছমিন, লালন সঙ্গীত শিল্পী সুজন রহমান, টিপু সুলতান, মৌসুমী বালা ও কাঙ্গালীনি সুফিয়া। এ সময় তবলায় ছিলেন, ইমতিয়াজ হাসান পুলক, অক্টোপ্যাটে ছিলেন সুমন, বেজ গীটারে সনি, লীড় গিটারে হ্যাপী, কি-বোর্ডে সুজন রহমান। এ সময় কুষ্টিয়ার লালন একাডেমীর সাংস্কৃতিক সম্পাদক মাহমুদুর রহমান আল কাদরী লালন একাডেমীর সঙ্গীত শিল্পী ও দুরারোগ্য ক্যান্সার রোগে আক্রান্ত মামুন হোসেন রতনের চিকিৎসায় কোম্পানীগঞ্জবাসির অবদানের জন্য আন্তরীক ধন্যবাদ জানান।

কোম্পানীগঞ্জে প্রথম বারের মতো পাচদিন ব্যাপী একুশে মেলার আয়োজন, অনলাইন মিডিয়া পার্টনার নোয়াখালী ওয়েব

'আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস' উপলক্ষে প্রথম বারের মতো কোম্পানীগঞ্জের কেন্দ্রীয় শহীদ মিনার চত্বরে পাচদিন ব্যাপী একুশে মেলা ও সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়েছে। ১৭ ফেব্রুয়ারী বিকেল ৩টায় নোয়াখালী পুলিশ সুপার মোঃ মুশফেকুর রহমান এ মেলার উদ্বোধন করবেন। এ নিয়ে থানা ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা এসএম রমজান হোসেনকে আহবায়ক করে একুশে মেলা ও সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান উদযাপনের একটি কমিটিও গঠন করা হয়েছে।কমিটির সদস্য সচিব সিপিপি নেতা মোঃ শহীদ উদ্দিন বাবুল বলেন, মেলাকে ঘিরো সমগ্র বৃহত্তর নোয়াখালীতে প্রচার প্রচারনা চালানো হচ্ছে। ব্যাপক সাড়াও পাওয়া যাচ্ছে। মেলায় একুশের চেতনাকে প্রাধাণ্য দিয়ে অনুষ্ঠান মালা সাজানো হয়েছে। আগামী ১৭ থেকে ২১ ফেব্রুয়ারী পাচদিন ব্যাপী এ মেলার প্রস্তুতি নিয়ে সমগ্র এলাকায় ব্যাপক উৎসবের আমেজ বিরাজ করছে বলেও তিনি জানান।মেলায় সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানের মধ্যে ঢাকার উদীচী শিল্পীগোষ্ঠী, স্বাধীন বাংলা বেতার কেন্দ্রের শিল্পীবৃন্দ, চট্টগ্রাম বেতার ও টিভির শিল্পীবৃন্দ, সোনিয়াসহ ক্লোজআপ ওয়ান শিল্পীবৃন্দ, কুষ্টিয়ার লালন শিল্পবৃন্দসহ কোম্পানীগঞ্জের বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠান, সংগীত বিদ্যালয়, কোম্পনীগঞ্জ সাংস্কৃতিক ফোরাম, ব্যাঞ্জণা খেলাঘর আসর, কোম্পানীগঞ্জ কবিতা পরিষদ, অমর সাংস্কৃতিক সংগঠন, নৃত্যকলা একাডেমী, মুক্ত সাংস্কৃতিক সংগঠন ও সামাজিক সাংস্কৃতিক সংগঠন গুলো অংশ গ্রহন করবে বলে সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে। মেলার অনলাইন মিডিয়া পার্টনার 'নোয়াখালী ওয়েব'।