Friday, September 12, 2008

বৃহত্তর নোয়াখালীর সংবাদ, সাংবাদিকতা ও সংবাদপত্রের উন্নয়নে নোয়াখালী ওয়েব

 www.noakhaliweb.com.bd :: নোয়াখালী বাংলাদেশের ঐতিহ্যবাহী একটি জেলা। প্রশাসনিক ভাবে বর্তমানে নোয়াখালী (নোয়াখালী, ফেনী, লক্ষ্মীপুর) তিন জেলায় বিভক্ত হলেও এ অঞ্চলের মানুষের কৃষ্টি কালচার একই রকম এবং সারাবিশ্বে 'নোয়াখাইল্লা' হিসাবেই এ অঞ্চলের মানুষ বিশেষভাবে পরিচিত। মেধাবী ও সৃষ্টিশীল হিসাবে এ অঞ্চলের মানুষের রয়েছে বিশ্ব স্বীকৃতি। শিক্ষা, সাহিত্য, সংস্কৃতি, প্রশাসন, ব্যবসা-বানিজ্য সর্বক্ষেত্রে নোয়াখালীর মানুষের অবদান অনস্বীকার্য। কথিত আছে জাতীয় অর্থনীতির ৩৫% নিয়ন্ত্রন করে নোয়াখালীর লোকজন। শুধু দেশে নয় বিদেশেও সমান কৃতিত্বের সাথে নোয়াখালীর মানুষ বরাবরের মত বিশেষ অবদান রেখে যাচ্ছে। জীবন জীবিকার প্রয়োজনে দেশে এবং বিশ্বের সর্বত্র এ অঞ্চলের মানুষ ছড়িয়ে ছিটিয়ে আছে। কিন্তু যে যেখানেই অবস্থান করুকনা না কেন নিজ এলাকার প্রতি টান এ অঞ্চলের মানুষের মাঝে বিশেষভাবে পরিলক্ষিত হয়। ফলে বৃহত্তর এ জনগোষ্ঠীর তথা বৃহত্তর নোয়াখালীর মানুষকে স্থানীয় ও কমিউনিটির খবরা-খবর তাৎক্ষণিকভাবে প্রদান করার লক্ষ্য নিয়ে সাংবাদিক খালেদ সাইফুল্যাহ'র ব্যক্তিগত উদ্যোগে ২০০৫ সালে অনলাইন পত্রিকা নোয়াখালী ওয়েবের যাত্রা শুরু হয়।

নোয়াখালী ওয়েব যখন কাজ শুরু করে তখন বাংলাদেশে অনলাইন পত্রিকার ধারনাটা একেবারেই নতুন এবং তখন পর্যন্ত বিডিনিউজ২৪.কম অনলাইনে তাদের নিউজ প্রকাশ করত। এজন্য প্রায় ১ বছর নোয়াখালী ওয়েব মানুষের মাঝে ইয়াহু অনলাইন গ্রুপ পরিচালনা সহ বিভিন্ন কার্যক্রমের মধ্য দিয়ে শুধুমাত্র অনলাইন পত্রিকা সম্পর্কে ধারণা/সচেতনতা তৈরী করার জন্য কাজ করে। ২০০৬ সালের শুরু থেকে পত্রিকাটি নিউজ প্রকাশনা শুরু করে। সংবাদ প্রকাশনা শুরু করার খুব অল্প সময়ের মধ্যে নোয়াখালী ওয়েব বৃহত্তর নোয়াখালীসহ বাংলাদেশের মানুষের কাছে বিশেষভাবে প্রবাসী বাংলাদেশীদের কাছে ব্যাপক জনপ্রিয়তা অর্জন করে। উল্লেখ্য বাংলাদেশের অঞ্চলভিত্তিক এটাই প্রথম কোন অনলাইন পত্রিকা যারা ২৪ ঘন্টা সংবাদ প্রদান করছে। অনলাইনে সংবাদ প্রকাশের পাশাপাশি বর্তমানে নোয়াখালী ওয়েব স্থানীয় দৈনিক/সাপ্তাহিক/মাসিক পত্রিকাগুলোকে ফ্রি! নিউজ সার্ভিস প্রদান করছে। এতে করে স্থানীয় পত্রিকাগুলো আরো বেশি তথ্য সমৃদ্ধ হচ্ছে। ইতোমধ্যে বৃহত্তর নোয়াখালীর প্রথম দৈনিক জাতীয় নিশান, দৈনিক লক্ষ্মীপুর কন্ঠ, সাপ্তাহিক নোয়াখালী কন্ঠ সহ বেশ কয়েকটি পত্রিকা নোয়াখালী ওয়েব'র নিউজ সার্ভিস গ্রহণ করছে।

২০০৭ এর ১৫ই আগষ্ট নোয়াখালী ওয়েব এর সাইটটি হ্যাকার দ্বারা আক্রান্ত হয়। নোয়াখালী ওয়েব এর অগ্রযাত্রায় ইশ্বান্বিত হয়ে স্থানীয় ও আন্তজার্তিক একটি গোষ্ঠী নোয়াখালী ওয়েবসাইট কে আক্রমন করে এবং সাইটে পর্ণ ছবি জুড়ে দেয়। যা তখকার সময়ে ব্যাপক মানসিক বিপর্যয়ের কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছিল। এ নিয়ে তখন বিভিন্ন জাতীয় ও স্থানীয় দৈনিকে ফলাওভাবে সংবাদ প্রকাশিত হয়েছিল। ১৫ দিন বন্ধ থাকার পর ১ সেপ্টেম্বর ২০০৭ থেকে নতুন ওয়েব ঠিকানায় নোয়াখালী ওয়েবের পূনরায় প্রকাশনা শুরু হয়। দেশ বিদেশে বৃহত্তর নোয়াখালীর অগনিত মানুষের অকুন্ঠ ভালোবাসায় মাত্র ছয়মাসের মধ্যে নোয়াখালী ওয়েব আগের তুলনায় আরো অনেক বেশি পাঠক প্রিয়তা অর্জন করে। ইতোমধ্যে পাঠক চাহিদার কথা বিবেচনা করে নোয়াখালী ওয়েব স্থানীয় সংবাদের পাশাপাশি জাতীয় সংবাদও প্রকাশ করা শুরু করে। এতে করে বৃহত্তর নোয়াখালীর বাহিরে অন্যান্য জেলার মানুষের কাছেও নোয়াখালী ওয়েব ব্যাপক জনপ্রিয়তা অর্জন করে। ফলশ্রুতিতে বর্তমানে বিশ্ববিখ্যাত এলাক্সা র্যাংকিং অনুযায়ী নোয়াখালী ওয়েব বাংলাদেশের দ্বিতীয় বৃহত্তম অনলাইন পত্রিকা (প্রথম : বিডিনিউজ২৪.কম, তৃতীয় : দি-এডিটর)। যা নোয়াখালীবাসীর জন্য গর্ব করার মত একটা বিষয়।

আপনার এলাকা, আপনার সংবাদ এ শ্লোগানকে ধারণ করে বর্তমানে নোয়াখালী ওয়েবের পাঠক সংখা দৈনিক প্রায় ২১,০০০ (একুশ হাজার, গত ছয় মাসের হিসাব অনুযায়ী) এবং প্রতিদিন এ সংখ্যা বাড়ছে। গত ১ এপ্রিল ২০০৮ থেকে নোয়াখালী ওয়েব পাঠকদের জন্য নিবন্ধন সিস্টেম চালু করলে বর্তমানে প্রায় ২০০০ পাঠক নিবন্ধিত হয়েছেন। এ পাঠক সংখার ৩০% আমেরিকা থেকে, ৩৫% মধ্যপ্রাচ্য থেকে এবং বাংলাদেশ ও অন্যান্য দেশ থেকে ৩৫%।

নোয়াখালী ওয়েব এর লক্ষ্য ও উদ্দেশ্য : (১) বৃহত্তর নোয়াখালীর স্থানীয় এবং দেশ বিদেশের বৃহত্তর নোয়াখালীর কমিউনিটির খবর তাৎক্ষনিকভাবে অনলাইনে প্রকাশ করা। এক্ষেত্রে পত্রিকাটির সম্পাদকীয় নীতি হচেছ বেশি বেশি ইতিবাচক সংবাদ প্রকাশ করা, যে সংবাদ মানুষের মাঝে অনুপ্রেরণা যোগায়। (২) স্থানীয় পত্রিকাগুলোর মান উন্নোয়নে ফি! নিউজ সার্ভিস প্রদানের মধ্যদিয়ে তাদের প্রকাশনায় সহায়তা করা এবং স্থানীয় ও জাতীয় বিভিন্ন ইস্যু যেমন শিক্ষা, কৃষি, স্বাস্থ্য, তথ্য প্রযুক্তি, মানবাধিকার, প্রাকৃতিক দূর্যোগ ইত্যাদি বিষয়ে সমন্বিত লেখা প্রকাশ ও বিভিন্ন কার্যক্রমের মধ্যদিয়ে স্থানীয় জনসাধারণকে সচেতন করে তোলা। যাতে করে জনসাধারণ গণ মাধ্যমের সত্যিকারের সুফল ভোগ করতে পারেন। (৩) দেশে এবং বিদেশে বৃহত্তর নোয়াখালীর মানুষে মানুষে, কোথাও কোথাও সংগঠনের সাথে সংগঠনের, ব্যবসা প্রতিষ্ঠানের সাথে ব্যাবসা প্রতিষ্ঠানের সেতু বন্ধন তৈরী করা যাতে করে আঞ্চলিক উন্নয়ন সহজ থেকে সহজতর হয়।

সবমিলিয়ে দেশে বিদেশে বৃহত্তর নোয়াখালীর মানুষের তাৎক্ষনিক তথ্য পাওয়ার অধিকার নিশ্চিত করাসহ নোয়াখালী ওয়েবের কমন ফ্লাটফর্মে বৃহত্তর নোয়াখালীর কমিউনিনিটিকে শক্তিশালী করা নোয়াখালী ওয়েবের প্রধান লক্ষ্য ও উদ্দেশ্য। যার মধ্য দিয়ে দেশে বিদেশে নোয়াখালীর মানুষ সম্পকে নেতিবাচক ধারনার পরিবর্তন হয়ে সবসময় ইতিবাচক ধারনা তৈরী হবে। এতে করে আমরা নোয়াখালীবাসীর স্বর্কীয়তা, নিজস্ব সংস্কৃতির ভালোদিকগুলো সবার সামনে সঠিকভাবে উপস্থাপিত হবে। এছাড়া নোয়াখালী ওয়েব নিয়মিত এককভাবে অথবা নিউজ পার্টনারদের সাথে যৌথভাবে শিক্ষা, স্বাস্থ্য, কৃষি ক্ষেত্রে তাদের সচেতনতামূলক, সভা, সেমিনার, গোল টেবিল আলোচনা, কর্মশালা ও বিভিন্ন ধরনের প্রতিযৌগিতার আয়োজন করবে।
নোয়াখালী ওয়েব যেহেতু অনলাইন ভিত্তিক পত্রিকা সেহেতু ইন্টারনেটের প্রসার এর সাথে সাথে নোয়াখালী ওয়েবের অগ্রযাত্রা অনেকটাই নির্ভরশীল। আমাদের প্রবাসী ভাইয়েরা অনেকেই এখন ইন্টারনেট ব্যবহার করলেও স্থানীয়ভাবে ইন্টারনেট ব্যবহারকারীর সংখ্যা আনুপাতিক হারে অনেক কম। ২০০৬ সালে গ্রামীন ফোন যখন প্রত্যন্ত অঞ্চলে ইন্টারনেট প্রসারের লক্ষ্যে কমিউনিটি ইনফরমেশন সেন্টার (সিআইসি) এর কাজ শুরু করে তখন নোয়াখালী ওয়েব বৃহত্তর নোয়াখালীতে ইন্টারনেট প্রসারের জন্য সিআইসির পার্টনার হিসাবে কাজ করে। এসকল কাজের ধারাবাহিকতায় ২০০৭ সালের শেষ পর্যন্ত পুরো বৃহত্তর নোয়াখালীতে ইন্টারনেট এর ভালো একটা ইউজার/পাঠক গোষ্ঠী তৈরী হয়েছে।

সহযোগী পোর্টাল : নোয়াখালী ওয়েবের সহযোগী পোর্টাল http://www.greaternoakhali.com.bd/ তে বৃহত্তর নোয়াখালীর জেলা টু গ্রাম পর্যন্ত সব ধরনের ইনফরমেশন প্রকাশ করা হবে। যেখান প্রতিটি জেলার ইতিহাস, মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাস, মানচিত্র, এখানকার ঐতিহ্য, বিশেষ ব্যক্তিদের প্রোপাইল 'আমাদের কৃতি সন্তান', প্রবাসীদের জন্য 'আমরা প্রবাসী' ডাটাবেইজ, সাধারণ মানুষের জন্য 'পাবলিক ডিরেক্টরি' এবং প্রাতিষ্ঠানিক অন্যান্য সব ধরনের তথ্য থাকবে, যা সার্বক্ষণিক ভাবে আপডেট হবে। এ কার্যক্রম বাস্তবায়নে কয়েক বছর সময় লাগলেও আমাদের বর্তমান ও পরবর্তী প্রজম্ম এর মধ্য দিয়ে অনলাইনে বৃহত্তর নোয়াখালীর একটি পূর্ণাঙ্গ তথ্য ভান্ডার পাবে বলে নোয়াখালী ওয়েব বিশ্বাস করে।

সহযোগী প্রকাশনা : শুধু অনলাইন নয় অফলাইনের মানুষদেরকেও সঠিক তথ্য সেবা প্রদান করা এবং এ অঞ্চলের নতুন লেখক সৃষ্টির লক্ষে 'নোয়াখালী ওয়েব' অফলাইন নামে একটি মাসিক ম্যাগাজিন প্রকাশের উদ্যোগ নিয়েছে। যেখানে বৃহত্তর নোয়াখালীর প্রতিদিনকার সংবাদ প্রবাহ ছাড়াও এ অঞ্চলের শিক্ষা, সাহিত্য, সংস্কৃতি, ঐতিহ্য, ইতিহাস, মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাস, আমাদের কৃতি সন্তানসহ নিত্যনতুন বিভাগ সমৃদ্ধ হয়ে ম্যাগাজিনটি শীঘ্রই নিয়মিতভাবে পাঠকের হাতে পৌঁছবে।
ব্যাবস্থাপনা : সম্পাদকীয় বোর্ড কতৃক নোয়াখালী ওয়েব'র মূল ব্যবস্থাপনা পরিচালিত হচ্ছে। তবে পত্রিকাটির মানোন্নয়নে বিভিন্ন পরামর্শ ও সহায়তা প্রদানের লক্ষ্যে পত্রিকাটির একটি শক্তিশালী উপদেষ্টা পরিষদ গঠনের কাজ চলছে। সাবেক কুটনৈতিক জনাব এস এম রাশেদ আহমেদ চৌধুরী, বিশিষ্ট শিল্প উদ্যোক্তা জনাব মোহাম্মদ ইউসুফ কে ইতোমধ্যে এ পরিষদে মনোনয়ন দেয়া হয়েছে। নোয়াখালী, ফেনী, লক্ষীপুর তিন জেলার জাতীয় ও আন্তর্জাতিকভাবে সুনাম অর্জনকারী এবং নিজ এলাকার উন্নয়নে আন্তরিক এরকম ১৫-২১ জনের সমন্বয়ে এ উপদেষ্টা পরিষদ গঠিত হবে এবং প্রতিবছর এ পরিষদ নতুনভাবে /পূণঃ মনোনীত হবে।

জনবল : দেশে এবং বিদেশে নোয়াখালী ওয়েব এর বর্তমান সাংবাদিক ও কর্মকর্তা-কর্মচারী ৫৫ জন।

ব্যয় নির্বাহ : নোয়াখালী ওয়েব ডিজিটাল ডেভেলপমেন্ট ফাউন্ডেশন (ডিডিএফ) এর অধীনে একটি অলাভজনক প্রকল্প। শুরু থেকে নোয়াখালী ওয়েবের প্রতিষ্ঠাতা সম্পাদক এর ব্যক্তিগত ও পরবর্তীতে তার পরিচালনাধীন ডিডিএফ এর অর্থায়নে এখন পর্যন্ত নোয়াখালী ওয়েবের ব্যয় নির্বাহ চলে আসছে। তবে প্রকল্পটিকে টেকসই করার লক্ষে নোয়াখালী ওয়েব একটি সহযোগী পরিবার গঠনের কাজ শুরু করছে। মূলত সহযোগী পরিবারের সদস্যদের মেম্বারশীপ ফি এবং কিছু বানিজ্যিক প্রতিষ্ঠানের বিজ্ঞাপন প্রকাশের মাধ্যমে পত্রিকা/সংবাদ মাধ্যমটির ব্যয় নির্বাহ করার পরিকল্পনা রয়েছে। এক্ষেত্রে সকলের সহযোগীতা একান্ত কাম্য।

পরিশেষে আপনার প্রতিষ্ঠানের/সংগঠনের ইতিবাচক কর্মকান্ডের খবর পাঠিয়ে নোয়াখালী ওয়েবের প্রকাশনাকে সমৃদ্ধ করার আহবান রইল।

সম্পাদকীয় কার্যালয় : ৮৪/৭ নয়াপল্টন (চতুর্থতলা), ঢাকা-১০০০। ফোন-ফ্যাক্স : ৮৮০ ২ ৮৩১১৫৩৭, মোবাইল : ০১৯১৬৫৫৩৩৬৬

1 comment:

Unknown said...

khub bhalo hoise ami ai site theke noakhali shomondhe onek kisu jante parsi.