Tuesday, September 23, 2008

পৃষ্ঠপোষকতা পেলে বিজেম হবে গণযোগাযোগ ও সাংবাদিকতা শিক্ষার একটি আর্দশ প্রতিষ্ঠান -নির্বাহী পরিচালক মির্জা তারেকুল কাদের



সাংবাদিকতাসহ গণযোগাযোগের সকল শাখায় মানসম্পন্ন শিক্ষা ও প্রশিক্ষণের অঙ্গীকার নিয়ে ২০০৩ সালে প্রতিষ্ঠিত হয় বাংলাদেশ ইনস্টিটিউট অব জার্নালিজম অ্যান্ড ইলেক্ট্রনিক মিডিয়া (বিজেম)। আধুনিক শিক্ষা, প্রশিক্ষণ, প্রকাশনা ও গবেষণামূলক এ প্রতিষ্ঠানটি প্রতিষ্ঠিত হয় সম্পূর্ণ বেসরকারী উদ্যোগে। ২০০৪ সালে জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ে পোস্ট গ্র্যাজুয়েট ডিপ্লোমা ইন জার্নালিজম বিষয়ে অধিভুক্ত এ প্রতিষ্ঠানটি গণমাধ্যম বিষয়ে বাংলাদেশের প্রথম বেসরকারি ইনস্টিটিউট। বৃহত্তর নোয়াখালীর (লক্ষ্মীপুর জেলার, রামগঞ্জ উপজেলা) কৃতি সন্তান সাংবাদিক, জনসংযোগবিদ, বিশিষ্ট লেখক ও গবেষক মির্জা তারেকুল কাদের এ ইনস্টিটিউটের প্রতিষ্ঠাতা ও নির্বাহী পরিচালক হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন। সমপ্রতি নোয়াখালী ওয়েবের সম্পাদক খালেদ সাইফুল্যাহ 'বিজেম' নিয়ে কথা বলেন নির্বাহী পরিচালক মির্জা তারেকুল কাদেরের সাথে। এ প্রসঙ্গে নিয়ে তিনি জানান, বিজেম পরিচালিত 'সাংবাদিকতায় স্নাতকোত্তর ডিপ্লোমা' দেশে সাংবাদিকতা শিক্ষার প্রসারে ও কর্মসংস্থানের ক্ষেত্রে বিশেষ অবদান রাখছে। এছাড়া স্বল্প মেয়াদী অন্যান্য কোর্স সম্পন্ন করেও শিক্ষার্থীদের অনেকেই বেকারত্বের দূর্বিসহ যন্ত্রণা থেকে মুক্তি পেয়েছেন। তিনি বলেন, কোন প্রকার সরকারী অনুদান ছাড়াই এ ইনস্টিটিউট গত ৫ বছরে যে সাফল্য অর্জন করেছে তা সম্পূর্ণরুপে ব্যক্তি উদ্যোগেই হয়েছে। আমরা এ ইনস্টিটিউটকে গণযোগাযোগ ও সাংবাদিকতা শিক্ষার একটি আর্দশ ও পূর্ণাঙ্গ প্রতিষ্ঠান হিসেবে গড়ে তোলার চেষ্টা করছি। কিন্তু প্রতিনিয়ত আমাদেরকে মোকাবিলা করতে হচ্ছে আর্থিক সমস্যাসহ বিভিন্ন ধরনের সমস্যা। আমরা এখনো বাংলাদেশ সরকার অথবা বিদেশী দাতা সংস্থাগুলো হতে কোন প্রকার অনুদান বা সাহায্য পাইনি। ইলেক্ট্রনিক সাজসরঞ্জামের অভাবে প্রশিক্ষণ কার্যক্রমও ব্যাহত হচ্ছে। সরকারী পৃষ্ঠপোষকতা, বিদেশী সাহায্য, এবং বিদ্যেৎসাহী ও সংস্কৃতিমনা দানশীল ব্যক্তিদের সহযোগিতা পেলে এ ইনস্টিটিউটকে গণযোগাযোগ ও সাংবাদিকতা শিক্ষার একটি আর্দশ প্রতিষ্ঠান হিসেবে গড়ে তোলা সম্ভব বলে জানালেন নির্বাহী পরিচালক। তিনি আরো জানান, ইনস্টিটিউট পরিচালনার জন্য রয়েছে একটি গভর্নিং বডি ও একটি উপদেষ্টা পরিষদ। গভর্নিং বডির চেয়ারম্যান হিসেবে রয়েছেন বিশিষ্ট শিল্পপতি, বিদোৎসাহী ও সমাজসেবক জনাব আনোয়ার হোসেন চৌধুরী। গভর্নিং বডির সদস্য হিসেবে রয়েছেন শিল্পপতি জনাব এস.এম.এমদাদুল ইসলাম ও শিল্পপতি জনাব নিসার আহমেদ। উপদেষ্টাদের মধ্যে রয়েছেন সাবেক রাষ্ট্রদূত আকরামুল কাদের, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের গণযোগাযোগ ও সাংবাদিকতা বিভাগের সাবেক চেয়ারম্যান অধ্যাপক ড. সাখাওয়াত আলী খান, জাতীয় প্রেস ক্লাবের সাবেক সভাপতি ও দি নিউজ টুডে সম্পাদক জনাব রিয়াজ উদ্দিন আহমেদ, এটিএন বাংলার চীফ এ্যাডভাইজার জনাব সাইফুল বারী এবং জাতীয় প্রেস ক্লাবের সভাপতি জনাব শওকাত মাহমুদসহ আরো কয়েকজন বিশিষ্ট গণমাধ্যম ব্যক্তিত্ব, শিক্ষাবিদ ও বিদোৎসাহী।
ইনস্টিটিউটের লক্ষ্য : এ ইনস্টিটিউট প্রতিষ্ঠার মূল লক্ষ্য হচ্ছে দেশে সাংবাদিকতা, জনসংযোগ, তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি, সম্পাদনা ও প্রকাশনা, চলচ্চিত্র, বিজ্ঞাপনকলা, ফটোগ্রাফী প্রভৃতি বিষয়ে কর্মমুখী, আধুনিক এবং মানসম্পন্ন শিক্ষা ও প্রশিক্ষণ, মৌলিক গবেষণা পরিচালনা এবং উল্লেখিত বিষয়ের উপর গ্রন্থ ও জার্নাল প্রকাশ করা। সাংবাদিকতায় স্নাতকোত্তর ডিপ্লোমা (পোস্ট গ্র্যাজুয়েট ডিপ্লোমা ইন জার্নালিজম) : জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের অধীনে ২০০৪-৫ শিক্ষাবর্ষ হতে বিজেম সাংবাদিকতায় ডিপ্লোমা কোর্স চালু করে। প্রথম ব্যাচে ৪ জন ছাত্রীসহ মোট ৩৭ জন শিক্ষার্থী কোর্সটি সম্পন্ন করেছে।
প্রশিক্ষণ কোর্স : ডিপ্লোমা ছাড়াও এই ইনস্টিটিউট ইতোমধ্যে সাংবাদিকতা এবং গণযোগাযোগের বিভিন্ন বিষয়ে বেশ কয়েকটি প্রশিক্ষণ কোর্স সফলভাবে সমাপ্ত করেছে। এসব কোর্সের মধ্যে রয়েছে, বেতার ও টেলিভিশনে সংবাদ উপস্থাপনা, টেলিভিশন সাংবাদিকতা, আধুনিক জনসংযোগ ও জনসংযোগের কলাকৌশল, ফ্রি-ল্যান্স সাংবাদিকতা, কলাম লেখার কলাকৌশল, প্রেস রিলিজ লিখন কৌশল ও ছবি সম্পাদনা, ফটো সাংবাদিকতা ও ডিজিটাল ফটোগ্রাফী, লেখালেখির কলাকৌশল, স্পোকেন ইংলিশসহ অন্যান্য কোর্স। এসব কোর্সের প্রত্যেকটিই শিক্ষার্থীদের কাছে বিশেষভাবে সমাদৃত হয়েছে। অর্জন ও
সাফল্য : প্রশিক্ষণ প্রদানের ক্ষেত্রে বিজেম ইতোমধ্যে বিরাট সাফল্য অর্জন করেছে। বিগত ৫ বছরে কোন প্রকার সরকারি ও বিদেশী দাতা সংস্থার সাহায্য-সহযোগিতা ছাড়াই এই প্রতিষ্ঠান ২ হাজার ৫শ' শিক্ষার্থীকে বিভিন্ন বিষয়ে প্রশিক্ষণ প্রদান করেছে। প্রশিক্ষণ লাভকারীদের মধ্যে রয়েছেন চাকুরীজীবী, বিশ্ববিদ্যালয় ও কলেজের ছাত্র-ছাত্রী, জনসংযোগ কর্মকর্তা, গৃহিনী, সরকারী ও বেসরকারী কর্মকর্তা। এদের প্রায় ১শ' জন এখন বিটিভি, এনটিভি, এটিএন বাংলা, ইটিভি, আরটিভি, চ্যানেল আই, চ্যানেল ওয়ান, বৈশাখী টেলিভিশন, বাংলাভিশন, দিগন্ত টিভিসহ অন্যান্য স্যাটেলাইট চ্যানেলগুলোতে এবং বাংলাদেশ বেতার ও বেসরকারী রেডিওতে টিভি সাংবাদিকতা, সংবাদ উপস্থাপনা, অনুষ্ঠান উপস্থাপক হিসেবে কাজ করছেন। এছাড়া শতাধিক শিক্ষার্থী বিভিন্ন জাতীয় সংবাদপত্রে স্টাফ রিপোর্টার, কন্ট্রিবিউটর, কলামিস্ট, ফ্রি-ল্যান্স সাংবাদিক ও লেখক হিসেবে কাজ করছেন; যা প্রশিক্ষণের ক্ষেত্রে এ ইনস্টিটিউটের সফলতাই প্রমাণ করে।
প্রকাশনা ও গবেষণা : প্রকাশনা ও গবেষণা ক্ষেত্রে বিজেম ইতোমধ্যে 'জনসংযোগ ও প্রকাশনা' শীর্ষক একটি বৃহৎ সংকলন গ্রন্থ (৫২০ পৃষ্ঠা) প্রকাশিত হয়েছে। এটি সম্পাদনা করেছেন ইনস্টিটিউটের নির্বাহী পরিচালক মির্জা তারেকুল কাদের। এছাড়া প্রকাশিত হয়েছে 'পাবলিক রিলেসন্স এন্ড মিডিয়া ডাইরেক্টরী' (২০০৪ ও ২০০৫)। এ ২টি প্রকাশনাই সুধীজন ও পাঠক কর্তৃক ব্যাপকভাবে সমাদৃত হয়েছে।
রিসোর্স পার্সন ও প্রশিক্ষক : কোর্স পরিচালনার জন্য ইনস্টিটিউটের রয়েছে দক্ষ, অভিজ্ঞ এবং দেশ-বিদেশে প্রশিক্ষণ প্রাপ্ত উচ্চ শিক্ষিত প্রশিক্ষক। নিজস্ব প্রশিক্ষক ছাড়াও অন্যান্য প্রশিক্ষকবৃন্দের মধ্যে রয়েছেন: প্রিন্ট ও ইলেক্ট্রনিক মিডিয়ায় কর্মরত স্বনামধন্য সাংবাদিকবৃন্দ, বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ে সাংবাদিকতা বিভাগের শিক্ষক, খ্যাতনামা সংবাদ উপস্থাপক ও টিভি ব্যক্তিত্ব, প্রখ্যাত লেখক, উচ্চারণ বিশেষজ্ঞ, ক্যামেরাম্যান, ভিডিও এডিটর এবং তথ্য ও যোগাযোগ বিশেষজ্ঞগণ।
শিক্ষার্থীদের প্রাপ্ত সুবিধা সমূহ : ইনস্টিটিউটের রয়েছে মাল্টিমিডিয়া প্রজেক্টর, কম্পিউটার, ল্যাপটপ, সনি হ্যান্ডিক্যাম, প্যানাসনিক ডিভি ক্যাম, ওভার হেড প্রজেক্টরসহ আধুনিক ইলেক্ট্রনিক সরঞ্জামাদি, সাউন্ড সিস্টেম, শীতাতপ নিয়ন্ত্রিত কনফারেন্স রুম ও ক্লাশ রুম। এছাড়াও রয়েছে দেশী-বিদেশী বইয়ে সম্মৃদ্ধ আধুনিক লাইব্রেরীসহ ইন্টারনেট সুবিধা। আর্থিকভাবে অসচ্ছল কিন্তু মেধাবী এমন ছাত্র-ছাত্রী, লেখক ও সাংবাদিকদের জন্য রয়েছে বিশেষ ব্যবস্থা। এ ক্ষেত্রে কতৃপক্ষ কোর্স ফি'র একটি নির্দিষ্ট অংশ ছাড় দিয়ে প্রশিক্ষণ গ্রহণে ইচ্ছুক শিক্ষার্থীদের প্রশিক্ষণ প্রদান ও উৎসাহিত করে। ভবিষ্যৎ
কর্মপন্থা : সাংবাদিকতায় ডিপ্লোমা ছাড়াও ভবিষ্যতে বিজেম আরো কয়েকটি কোর্স পরিচালনার পরিকল্পনা করছে। এর মধ্যে একটি হলো গ্রন্থাগার ও তথ্য বিজ্ঞানে মাস্টার্স কোর্স চালু। এছাড়া ডিজিটাল ভিডিও এডিটিং, ক্যামেরা অপারেশন্স, ডিজিটাল ফটোগ্রাফি, বিজ্ঞাপনকলা, চলচ্চিত্র নির্মাণ, সম্পাদনা ও প্রকাশনার কলাকৌশল, তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি প্রভৃতি বিষয়ে নতুন নতুন প্রশিক্ষণ কোর্স প্রদানের লক্ষ্যে প্রস্তুতি নেয়া হচ্ছে।
যোগাযোগ, নির্বাহী পরিচালক, বিজেম, ২৫৭/৮ এলিফ্যান্ট রোড, কাটাবন ঢাল, ঢাকা-১২০৫। ফোন : ৮৬১৭৯১২, ৯৬৭৪২২৪

1 comment:

Unknown said...

Unable to read. Font problem