আশির
দশকে প্রশাসনিকভাবে নোয়াখালী,
ফেনী ও লক্ষ্মীপুর তিন জেলায় বিভক্ত হলেও এ অঞ্চলের মানুষের
কৃষ্টি কালচার একই রকম এবং সারাবিশ্বে ‘নোয়াখাইল্লা’ হিসাবেই
এ অঞ্চলের মানুষ বিশেষভাবে পরিচিত। বার বার নদী ভাঙনে বাংলাদেশের সুপ্রাচীন
সভ্যতার লীলাভূমি রয়ালডিস্টিক খ্যাত ভুলুয়ার বিখ্যাত দীঘি, ফরাশগঞ্জ
বন্দর, প্রাচীন
অনেক ঐতিহাসিক স্থাপনার বিলীন হয়ে যায়। ভাঙাগড়ার নোয়াখালী, উপকূলীয়
নোয়াখালী সপ্রতিভ সবসময়ে,
তার সাহিত্য-সংস্কৃতি, মেধা ও মননে। এখানকার মানুষগুলো মেঘনা
নদীর ভাঙন দেখতে দেখতে সংগ্রামী মনোভাব ফুটিয়ে তোলে তার আপন সত্তায়, আপন
বোধে। সমুন্নত রাখে তার ভাব-বোধ,
সংস্কৃতি-কৃষ্টিতে। শিল্পের প্রাণময় বিকাশে এখানকার
মানুষগুলোর জুড়ি নেই। প্রমত্ত মেঘনার পাড়ে বসে অসংখ্য গুণী মানুষ এখানে
নান্দীপাঠ করেছেন।প্রবাসী অধ্যুষিত বৃহত্তর এ জনগোষ্ঠীর তথা বৃহত্তর নোয়াখালীর মানুষকে
স্থানীয় ও কমিউনিটির খবরা-খবর তাৎক্ষনিকভাবে প্রদান করার লক্ষ্য নিয়ে
২০০৫ সালের পহেলা জুলাই অনলাইন পত্রিকা নোয়াখালী ওয়েবের যাত্রা শুরু হয়। আপনার
এলাকা, আপনার
সংবাদ -এ স্লোগানকে ধারণ করে বৃহত্তর নোয়াখালীর সর্বপ্রথম অনলাইন পত্রিকা
নোয়াখালী ওয়েব ১০ম বর্ষে পদার্পন করল। যাত্রার শুরুর দিনগুলোতে বাংলাদেশে অনলাইন
পত্রিকার ধারনাটা একেবারেই নতুন ছিল এবং একমাত্র বিডিনিউজ অনলাইনে তাদের নিউজ প্রকাশ করত। কার্যক্রম
শুরুর আগে নোয়াখালী ওয়েব প্রায় ১ বছর মানুষের মধ্যে অনলাইন পত্রিকা সম্পর্কে
ধারণা তৈরি করার জন্য কাজ করে,
ইন্টারনেট এর প্রসারের লক্ষ্যে জিপিসিআইসিসহ বিভিন্ন প্রজেক্ট
এর সাথে পার্টনার হিসাবে কাজ করে এবং ২০০৫ সালের জুলাই মাস থেকে পত্রিকাটি নিউজ
প্রকাশনা শুরু করে। প্রকাশনা শুরু করার খুব অল্প সময়ের মধ্যে নোয়াখালী ওয়েব
বৃহত্তর নোয়াখালীসহ বাংলাদেশের মানুষের কাছে বিশেষ করে প্রবাসীদের কাছে ব্যাপক
জনপ্রিয়তা অর্জন করে। শুধু বৃহত্তর নোয়াখালী নয়, বাংলাদেশের প্রথম আঞ্চলিক (কমিউনিটির) অনলাইন
পত্রিকা হিসেবে ২৪ ঘন্টা সংবাদ প্রদান করার গৌরবটি নোয়াখালী ওয়েব’র
দখলে। আঞ্চলিক অনলাইন পত্রিকা হিসেবে নোয়াখালী ওয়েব-ই প্রথম, যা আজ
বাংলাদেশের অন্যান্য অঞ্চলে মডেল হিসেবে অনুসরণ করা হচ্ছে। ইতোমধ্যে পাঠক চাহিদার
কথা বিবেচনা করে নোয়াখালী ওয়েব স্থানীয় সংবাদের পাশাপাশি জাতীয় ও আন্তর্জাতিক
সংবাদও প্রকাশ করছে। এতে করে বৃহত্তর নোয়াখালীর বাহিরে অন্যান্য জেলার মানুষের
কাছেও নোয়াখালী ওয়েব ব্যাপক জনপ্রিয়তা অর্জন করতে সক্ষম হয়েছে। যা
নোয়াখালীবাসীর জন্য গর্ব করার মত একটি বিষয়।
বিশ্ববিখ্যাত
এল্যাক্সা র্যাংকিং অনুসারে বর্তমানে ‘নোয়াখালী ওয়েব’ বাংলাদেশের
অন্যতম অনলাইন পত্রিকা। দেশে এবং বিদেশে বর্তমানে এর দৈনিক পাঠক সংখ্যা প্রায় ৮০,০০০ (আশি
হাজার) যা প্রতিনিয়ত বাড়ছে।
পাঠক
সংখ্যার দিক থেকে বাংলাদেশ, সৌদি
আরব, যুক্তরাষ্ট্র, সংযুক্ত
আরব আমিরাত, ইতালী, যুক্তরাজ্য, কুয়েত, কাতার, ফ্রান্স, ভারত, কানাডা, সিঙ্গাপুর, অস্ট্রেলিয়া, মালেশিয়া, ফিনল্যান্ড
ধারাবাহিকভাবে শীর্ষে রয়েছে। উল্লেখ্য বৃহত্তর নোয়াখালীর প্রায় ১২
লক্ষ লোক প্রবাসে অবস্থান করছে। ফলে অনলাইন ভিত্তিক ডিজিটাল পত্রিকাটি বৃহত্তর এ
জনগোষ্ঠীর মাঝে দ্রুততার সাথে পৌঁছে যাচ্ছে। আশা করা হচ্ছে এ বছর (২০১৪) সাল নাগাদ
এর পাঠক সংখ্যা হবে লক্ষাধিক।
বৃহত্তর নোয়াখালীর মানুষদের জন্য সেবামূলক এবং সময়োপযুগী কিছু করার স্বপ্ন থেকে সাংবাদিক খালেদ সাইফুল্যাহর ব্যক্তিগত উদ্যোগ ও প্রচেষ্টায় নোয়াখালী ওয়েব প্রতিষ্ঠা লাভ করে এবং তার ব্যবসায়িক প্রতিষ্ঠান ডিজিটাল ডেভেলপমেন্ট ফাউন্ডেশন লিমিটেড এর আর্থিক সহায়তায় পত্রিকাটি এখন পর্যন্ত চলমান রয়েছে। পাশাপাশি কিছু হৃদয়বান মানুষ তাদের ন্যুনতম সহযোগিতা দিয়ে নোয়াখালী ওয়েব’র পথ চলায় সাহস যুগিয়েছেন। নোয়াখালী ওয়েব প্রতিষ্ঠার পর দীর্ঘ পথ পরিক্রমায় খালেদ সাইফুল্যাহকে উৎসাহ ও উদ্দীপনায় যারা সহযোগিতা করেছেন তাদের মধ্যে মাহমুদুল হক ফয়েজ, মির্জা তারেকুল কাদের, হাবীব ইমন, ইকবাল হোসেন মজনু, মোহাম্মদ কাওছার উদ্দীন, সাইফুল্যাহ কামরুল, নাসির উদ্দিন বাদল, মো. মাহবুবুর রহমান, মিজানুর রহমান, খোরশেদ আলম, সোহরাব হোসেন বাবর, মোহাম্মদ শরফ উদ্দিন শাহীন, হাসান ইমাম রাসেল, মোহাম্মদ আবু তাহের, বখতেয়ার ইসলাম মুন্না, মোহাম্মদ শাহাদাৎ হোসেন, সারোয়ার রানা, আব্দুল্লাহ আল মামুন, এমরান পাটোয়ারী, নূর শাহ আজাদ, রেজাউল কবির সামাদ, মিজানুর রহমান মানিক, রবিউল ইসলাম খান, নজরুল ইসলাম দীপু অন্যতম। এর বাহিরে বিভিন্ন লেখনির মাধ্যমে আরো যাদের সহযোগিতা পেয়েছি তাদের মধ্যে, বিজন সেন, মাহবুবুর রহমান তুহিন, জাহিদুর রহমান’র নাম বিশেষভাবে উল্লেখযোগ্য। তবে নোয়াখালীর লোক না হয়েও নোয়াখালী ওয়েব'র জন্য যার অবদান সবচেয়ে বেশি তিনি হলেন ফরিদপুর নিবাসী এবং দুবাই প্রবাসী, বাংলা এক্সপ্রেস পত্রিকার সম্পাদক ও প্রকাশক মোহাম্মদ হারুনুর রশীদ। ব্যক্তিগত সম্পর্ক এবং নোয়াখালী ওয়েব'র প্রতি আন্তরিকতার কারণে যেকোন ক্রান্তিকালে ঋণ দিয়ে কিংবা বুদ্ধি পরামর্শ দিয়ে তিনি সব সময় নোয়াখালী ওয়েব'র পাশে ছিলেন এবং এখনো আছেন। এছাড়া নোয়াখালী ওয়েবের মুদ্রাকর মোহাম্মদ শামছু উদ্দিন পারভেজ, ওয়েব ডেভেলপার ইঞ্জি: আবু সুমাইন, ইঞ্জি: তারেকুল ইসলাম খান, ইঞ্জি: শামছুল হক, লিটন চন্দ্র দেসহ কিছু মানুষের অবদান নোয়াখালী ওয়েব সব সময় কৃতজ্ঞতার সাথে স্মরণ রাখবে।
প্রতিষ্ঠানটি চলার পথে অর্থনৈতিকভাবে আমরা বৃহত্তর নোয়াখালীবাসীর তেমন কোন আর্থিক সহযোগিতা পাইনি। তবে ইসলাম করিম ফাউন্ডেশনের প্রতিষ্ঠাতা চেয়ারম্যান বৃটিশ-বাংলাদেশী জনাব নুরুল করিম, সুলতান আনোয়ারা ফাউন্ডেশনের প্রতিষ্ঠাতা আমেরিকা প্রবাসী জনাব মো. কাজল, ফ্রান্স প্রবাসী জনাব এম এ তাহের, দেবব্রত চক্রবর্তী ভূলন, ইতালী প্রবাসী মোহাম্মদ মাঈন উদ্দিন ভূইয়াসহ বেশ কয়েকজন তাদের যে আন্তরিকতা দেখিয়েছেন এ জন্য আমরা তাদের কাছে বিশেষভাবে কৃতজ্ঞ। এছাড়া মেট্রো হোমস ডেভে. লি. এর ব্যবস্থাপনা পরিচালক জনাব ফখরুল ইসলাম ২০১০-২০১৩ সাল পর্যন্ত একটি নিয়মিত বিজ্ঞাপন প্রদানের মাধ্যমে প্রতিষ্ঠানটিকে সহযোগিতা দিয়েছেন এজন্য আমরা তার কাছেও কৃতজ্ঞ। এছাড়া কয়েকজন ব্যবসায়ী সহযোগিতা করার যে মনোভাব দেখিয়েছেন তাদের প্রত্যেকের কাছে আমরা কৃতজ্ঞ। তবে সবচেয়ে বেশি কৃতজ্ঞ ডিজিটাল ডেভেলপমেন্ট ফাউন্ডেশন লিমিটেড এর সম্মানিত চেয়ারম্যান মোহাম্মদ আবু নাসের, পরিচালক মো. রিয়াজ উদ্দিন, মো. আশরাফুল কবিরসহ সংশ্লিষ্ট সকলের কাছে যারা বিপুল পরিমাণ প্রাতিষ্ঠানিক লোকসান স্বত্বেও নোয়াখালী ওয়েবকে চালিয়ে নেয়ার ব্যাপারে কখনো দ্বিমত পোষণ করেন নি।
নোয়াখালী ওয়েব এর দীর্ঘ সময়ের চলার পথটি কখনো মসৃণ ছিল না। শুরু থেকেই নোয়াখালীর কতিপয় লোক প্রতিষ্ঠানটির বিরুদ্ধে উঠে পড়ে লাগে। বিভিন্ন ধরনের ষড়যন্ত্র, অপ-প্রচার অব্যাহত রাখে। এক সময় প্রতিষ্ঠান থেকে বাদ পড়া লোকজনও হিংসা কিংবা হীন স্বার্থের কারণে শত্রু হিসাবে আবিভূত হয়ে বিভিন্নভাবে ক্ষতি সাধনের চেষ্টা করেছেন এবং এখনো করে যাচ্ছেন। কিন্তু আমরা মনে করি হিংসার বশবর্তী হয়ে ভালো কাজের বিরুদ্ধে যারা অবস্থান নেয় তারা কখনো সফল হয় না। প্রকাশ্যে অথবা অপ্রকাশ্যে যারাই বিভিন্ন ধরনের ক্ষতিকর কর্মকান্ডে লিপ্ত ছিলেন বা আছেন তাদের ফলাফল শূন্য। নোয়াখালী ওয়েব এর মূল চালিকা শক্তি হাজারো পাঠকের ভালোবাসা আর সেই শক্তিতেই পত্রিকাটি এতদূর আসতে সক্ষম হয়েছে। সুতরাং ভালোবাসার বিপরীতে যারা ঘৃণা ছড়ানোর চেষ্টা করেন/ করবেন তারা মানুষরুপী অমানুষ। আশা করি ভবিষ্যতে যে কেউ যে কোন ধরনের ক্ষতিকর কর্মকান্ড থেকে বিরত থাকবেন এবং সামাজিক গণমাধ্যমটিকে সামনের দিকে এগিয়ে নেয়ার ক্ষেত্রে সহযোগিতার হাত বাড়িয়ে দিবেন।
দেশে-বিদেশে বৃহত্তর নোয়াখালীর মান মর্যাদাকে তুলে ধরার যে প্রচেষ্টা আসুন আমরা হিংসা ভেদাভেদ ভুলে দলমত নির্বিশেষে সকলে মিলে সে প্রচেষ্টায় অংশগ্রহণ করি এবং সফল হওয়ার চেষ্টা করি।
ফিডব্যাক:
০১৯৭১৩৩৯৯৩৩, ০১৬৭১৩৩৯৯৩৩
editor@noakhaliweb.com.bd
editor@noakhaliweb.com.bd
No comments:
Post a Comment